বিচার না হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে : নাগরিক প্ল্যাটফর্ম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৩ এএম, ২৩ অক্টোবর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:০৯ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
কুমিল্লাসহ সারাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে এর বিচার দাবি করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের বক্তারা। তারা বলেছেন, এসব ঘটনার বিচার না হওয়ায় এমনটি হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নাগরিক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আয়োজনে এ সভা হয়।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রাজনীতিতে ধর্মীয় অপশক্তির সঙ্গে মীমাংসা ও প্রশ্রয় এবং সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্ম ব্যবহারের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এসডিজির ১৬ নম্বর ধারার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার এই সনদে ২০১৫ সালে সই করে। নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকারের ভিত্তিতে এই সনদ অনুযায়ী সরকারের উচিত মানুষের নিরাপত্তা দেয়া।
এ সময় অনলাইনে যুক্ত হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, ‘পুলিশ ৩০০, ৫০০, ৮০০ আসামির কথা উল্লেখ করে আগেই জানান দিয়ে দিচ্ছে এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আগে আমি ভাবতাম এখানে অন্য কিছু আছে। কিন্তু এখন আমার ধারণা ক্রমশই দৃঢ় হচ্ছে।’
উন্নয়ন ও চিন্তাবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। আমি খুবই বিব্রত এবং মর্মাহত। এগুলো কেন ঘটলো। কারা ঘটাচ্ছে এবং কারা ঘটতে দিচ্ছে উভয় সমানভাবে দায়ী। আমাদের বিচারহীনতার কথা বলা হচ্ছে। এই বিচারহীনতা দূর করতে হবে। তা না হলে এ রকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান পরিষদের সভাপতি ড. নিমচন্দ ভৌমিক বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনার দ্রুত প্রতিকার হোক এমন প্রত্যাশা করি।’
সাম্প্রদায়িক হামলা নিয়ে একটি কমিশন গঠনের দাবি করে মানবাধিকার কর্মী খুশি কবীর বলেন, ‘এমন একটা কমিশন গঠন করা উচিত যাদের সবাই সম্মান করেন। ১০০-২০০ আসামির মামলা চাই না। সুস্পষ্ট তালিকা চাই।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘দেশ বিচারহীনতার মধ্যে দিয়ে চলছে। যে কারণে একটার পর একটা ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাদের তরুণ প্রজন্ম।’
অ্যাডভোকেট রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এই দেশটা এমনভাবে যাচ্ছে এখানে ভিন্নমতের ভিন্ন পরিচয়ের আর কোনো জায়গা রাখা হয়নি। আমি অবাক হচ্ছি।’
বাংলাদেশ পেশাজীবী আন্দোলনের নেতা সরয়ার আলী বলেন, ‘আমি কয়েকদিন ধরে যেটা ভেবেছি, বাংলাদেশ যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ সেটা বলার সাহস হারিয়ে ফেলছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘এই ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দুজন মুসলিম যারা বাঁচানোর চেষ্টা করছিল তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে।’
অনলাইনে যুক্ত হয়ে ময়মনসিংহ-৮ আসনের সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘আমাদের রাজনীতির যে চর্চা চলছে সেটা আইডিয়াল না। এই রাজনীতিটা আর কেউ চায় না। কিন্তু এখান থেকে বের হওয়ার উপায় কী? উপায়টা হচ্ছে সিভিল সোসাইটিকে এগিয়ে আসতে হবে। আপনারা যে আলোচনা করেন সেটা ছেড়ে দিলে চলবে না। ভয়েসটা রেইজ করতে হবে। আমরা যে জায়গাটাতে ব্যর্থ হয়েছি সেটা আপনারা এসে পূরণ করুন।’