ঢাকায় ৪ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের প্রাথমিক স্থান নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৫ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ১২:৫৮ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে ঢাকা মহানগরীর শহরতলিতে চারটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে টার্মিনালের স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। নির্বাচিত স্থানগুলো হচ্ছে আশুলিয়া বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বাটুলিয়া, সাভারের হেমায়েতপুর, কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ও কাঁচপুর ব্রিজ সংলগ্ন। এই চারটি টার্মিনাল নির্মাণ হলে রাজধানীর মধ্যে আন্তঃজেলা বাসগুলো প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও মো. আতিকুল ইসলাম।
আজ বুধবার বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির নিকট কারিগরি কমিটি কর্তৃক আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ও ডিপোর জন্য প্রস্তাবিত স্থানসমূহ পরিদর্শন শেষে তারা এসব কথা বলেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বাস রুট রেশনালাইজেশনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমরা পুরো গণপরিবহন ব্যবস্থাকে এটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চাই। আমরা এরইমাঝে কাজ আরম্ভ করেছি। সে প্রেক্ষিতেই গত সভাতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের জন্য যে দশটি স্থানকে নির্বাচন করা হয়েছে, সেখান থেকে আমরা তালিকা ছোট করে এনেছি। আমরা মনে করেছি যে, সার্বিকভাবে চারটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে। সে প্রেক্ষিতে সব কয়টি স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। এই চারটি স্থান পরিদর্শনের পর আমরা আগামী জানুয়ারি মাসে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভা দিয়েছি। সেখানে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। সিদ্ধান্তের পর আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো যে, কোনগুলোতে টার্মিনাল স্থাপন করা যাবে। আমাদের লক্ষ্য হলো ঢাকা শহরের ওপর থেকে চাপটা কমিয়ে আনা। বহির্বিশ্বে আন্তঃজেলা গণপরিবহন শহরের মধ্যে ঢোকে না উল্লেখ করে তাপস বলেন, আমরা লক্ষ্য করি শহরের মধ্যে যে বাস টার্মিনালগুলো আছে, যেমন- মহাখালী, সায়দাবাদ, গাবতলী-আন্তঃজেলা বাসগুলো সেসব টার্মিনাল ব্যবহার করে থাকে। সিটি বাস টার্মিনাল আমাদের কার্যকর নেই। তার মানে যত্রতত্রভাবে সিটি বাসগুলো রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থেকে যানজট সৃষ্টি করে এবং একটি বিশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি করে। সবকিছু মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে গণপরিবহনে একটি শৃঙ্খলা নিয়ে আসতে আমাদের এই কার্যক্রম। আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে, যাতে করে আগামী বছরের মধ্যে আমরা একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখার আওতায় আসতে পারি। এক প্রশ্নের উত্তরে তাপস বলেন, কাঁচপুরের স্থানটি আমাদের পছন্দ হয়েছে। এটি আমরা আগেই অধিগ্রহণ করে রেখেছি। এখানে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। আরেক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এসব টার্মিনালে কতটি বাস থাকবে তা এখন বলা সম্ভব নয়। আমার দেখে শুনেই সব ঠিক করবো।
এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোারেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি বাস্তবায়নের ফলে বাইরের বাসগুলো ঢাকা শহরের মধ্যে ঢুকতে পারবে না। শহরের বাস শহরের ভেতরে চলবে। শহরের বাইরের বাস অর্থাৎ আন্তঃজেলা বাস একটি নির্দিষ্ট জায়গায় এসে থেমে যাবে। বাস রুট ফ্রেঞ্চাইজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শহরের বাইরের বাস ঢাকার মধ্যে ঢুকতে পারবে না। কারণ এখন শহরের বাসের সাথে আন্তঃজেলা বাসের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এতে কিন্তু আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে এবং ট্রাফিক জ্যামের চেষ্টা হচ্ছে। শহরের বাসকে শহরের ভেতরে চলতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট রুটের মধ্যে চলতে হবে।
আতিক বলেন, গত সভাতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকায় ঘাটারচর হতে মতিঝিল পর্যন্ত, যেখানে ১৬০টির বেশি বাস ও ২৯ জনের বেশি মালিকের বাস চলাচল করে। কিন্তু সেটিকে আমরা একটি কোম্পানির মধ্যে নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। বাস মালিক ও শ্রমিকরাও এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমরা সবাই চাই একটি শৃংখলা আনতে। তাই শৃঙ্খলা আনার জন্য শহরের বাস শহরের ফ্রেঞ্চাইজ রুট দিয়ে চলবে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পয়লা এপ্রিল থেকে ঘাটারচর-মতিঝিল রুটে আমরা প্রথম (বাস রুট ফ্রেঞ্চাইজি) শুরু করতে যাচ্ছি। পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমানসহ দুই সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।