কাপ্তান বাজার জামে মসজিদ কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে দুনীর্তি ও অনিয়মের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৫ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০২:০০ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কাপ্তান বাজার (ঠাটারী বাজার) জামে মসজিদ ওয়াক্ফ এষ্টেট পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহিউদ্দিন বুলুর বিরুদ্ধে দুনীর্তি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যরা।
গতকাল রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩.০০ টা জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক (মোতয়াল্লী) মোঃ বাহাউদ্দিন বলেন, কাপ্তান বাজার (ঠাটারী বাজার) জামে মসজিদ ওয়াক্ফ এষ্টেট পরিচালনা কমিটি, ইসি নং—১৫৬১৬ একটি ঐতিহ্যবাহী জামে মসজিদ। দীর্ঘ বছর যাবত উক্ত মসজিদের কার্যক্রম সুন্দরভাবে সুনামের সহিত পরিচালিত হয়ে আসছে। অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, একটি সংঘবদ্ধ অসাধু চক্র উক্ত মসজিদের অর্থ আত্মসাতের লক্ষ্যে মসজিদ কমিটির পদ দখলের অসৎ উদ্দেশ্যে লিপ্ত হয়।
সর্বোপরি ২০১৯ সালে হঠাৎ করে মহিউদ্দিন বুলু গং নিজেরা নিজেদের মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ বলে দাবী করেন। গত ১১/১২/২০১৯ইং তারিখ ওয়াক্ফ এষ্টেট থেকে ক্ষমতা জোরে কমিটির অনুমোদন নিয়ে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের পায়তারায় লিপ্ত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে মসজিদ কমিটির সদস্যদের বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একক সিদ্ধান্তে মসজিদের ৪ তলা বাণিজ্যিক ভবন ভেঙ্গে দেয়। যার নির্মাণ খরচ ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি। তার পাশাপাশি মসজিদের সম্পত্তি ৩০টি গোডাউন ও একটি কারখানা ভেঙ্গে দিয়ে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া বাবদ মসজিদের আয় বন্ধ করে দেন।
তিনি আরো বলেন, মসজিদের উন্নয়নের নামে ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করে আত্মসাৎ করে উল্লেখিত মহিউদ্দিন বুলু গং। মসজিদের গণশৌচাগার ভাড়া বাবদ উত্তোলনকৃত ১ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকার অর্থ মসজিদ ফান্ডে জমা না দিয় আত্মসাৎ করেন। সিনিয়র সহ—সভাপতি খন্দকার আবছারের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে মসজিদ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন অজুহাতে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেন। কোষাধ্যক্ষ কসাই শামীম মসজিদের উন্নয়নের নামে কসাই পট্টি এবং মাছ বাজারের ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ধার্য করে দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
তিনি বলেন, মহিউদ্দিন বুলু গংদের অন্যায়—অবিচারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই দোকান ভাংচুর ও দোকানে তালা দেওয়া সহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকেন। কুমিল্লার কুখ্যাত সন্ত্রাসী বিএনপি—জামায়াতের পৃষ্ঠপোষক নাশকতা মামলার আসামী আব্দুল মান্নান মনু সভাপতি মহিউদ্দিন বুলুর সহযোগিতায় আওয়ামীলীগার পরিচয় দিয়ে মসজিদ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সময় শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে আসছে এবং সরকারি দলের বিভিন্ন নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
বাহাউদ্দিন বলেন, উক্ত চক্রটি মসজিদের উন্নয়নের নামে উত্তোলিত অর্থের কোন হিসাব মসজিদ কমিটিকে প্রদান করেন না। মসজিদের মাসিক মোট উপার্জনের অর্থের হিসাব প্রদান না করে সভাপতি মহিউদ্দিন বুলু গং সম্পূর্ণ অর্থ আত্মসাৎ করেন। এর হিসাব চাইলে কমিটির সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে অপমান করে থাকেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬/০৯/২০২১ তারিখ সাধারণ সম্পাদক (মোতয়াল্লী) সহ বর্তমান মসজিদ কমিটির জীবিত ৩৪ জন সদস্যের মধ্যে ২১ জন সদস্য কমিটি থেকে একযোগে পদত্যাগ করেন।
এ সময় মসজিদ কমিটির উপস্থিত সদস্যরা কাপ্তান বাজার (ঠাটারী বাজার) জামে মসজিদের সুনাম রক্ষার্থে মসজিদ ফান্ডের সকল অর্থ ফেরত পেতে অসহায় ব্যবসায়ীদের নির্মম নির্যাতনকারী ও চাঁদাবাজ মহিউদ্দিন বুলুগং এর হাত থেকে রক্ষা পেতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান এবং অনতি বিলম্বে মসজিদের সকল অর্থ মসজিদ ফান্ডে জমা দেওয়ার দাবি জানান। তারা মহিউদ্দিন বুলু গং কতৃর্ক ৪ তলা ভবনসহ গোডাউন এবং কারখানার সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদানে প্রশাসনের নিকট ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন। এই মুহুর্ত থেকে মহিউদ্দিন বুলু গংদের কমিটি থেকে অপসারণ করার দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল হক ভূইয়া, সহ—সভাপতি, হাজী মোঃ বাহাউদ্দীন— মোতাওয়াল্লী/সাধারণ সম্পাদক, মহি উদ্দিন ভূইয়া প্রচার সম্পাদক, ফখরুল ইসলাম দপ্তর সম্পাদক, হাজী গোলাম মোস্তফা কার্যকারী সদস্য, আব্দুল মান্নান শেখ কার্যকারী সদস্য, হাজী মোঃ শরিফ রমজান সদস্য, হাজী মোঃ আলম মুন্সি সহ মসজিদ কমিটি ও মসজিদ মার্কেটের ব্যবসায়ী বৃন্দ।