আরিচা ঘাটে গাড়ি থামিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৯ এএম, ২০ আগস্ট,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৫৪ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে আরিচা ফেরিঘাটে সড়কের ওপর যানবাহন থামিয়ে ইজারাদারের লোকজন অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ট্রাক চালকরা।
আজ বৃহস্পতিবার ঘাট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টার্মিনালে অবস্থানকারী যানবাহন থেকে পার্কিং চার্জ নেয়ার বিধান আছে। তবে ইজারাদারের লোকজন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ঘর বসিয়ে ট্রাক থামিয়ে টার্মিনাল চার্জের নামে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় করছেন। পাবনার কাজিরহাটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টার্মিনাল চার্জ পরিশোধ করে ফেরি পার হয়ে আরিচা ঘাটে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চালকদের কাছ থেকে ইজারাদারের লোকজন ৫০ টাকা করে আদায় করছেন বলে জানান ট্রাক চালকরা। চাঁদা দিতে না চাইলে ইজারাদারের লোকজন তাদের মারধর করে বলেও অভিযোগ করেন ট্রাক চালকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিআইডব্লিউটিএর টার্মিনালে থাকা গাড়ি থেকে টার্মিনাল চার্জ নেয়ার কথা। কিন্তু ইজারাদারের লোকজন তা না করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তার ওপর গাড়ি থামিয়ে ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন থেকেই জোরপূর্বক পার্কিং চার্জ আদায় করছেন। এতে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এই অবৈধ চাঁদাবাজির ঘটনায় যানবাহন শ্রমিক ও স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে। গাড়ি চালকদের সঙ্গে ইজারাদারের লোকজনের ঝগড়াও হচ্ছে কখনও। ২০২১-২০২১ অর্থবছরের জন্য আরিচা ঘাটের মিনি টার্মিনাল ও ট্রাক টার্মিনালের পার্কিং চার্জ আদায়ের জন্য ইজারাদার নিয়োগ দেয় বিআইডব্লিউটিএ। করোনা মহামারির কারণে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দ্বিতীয় মেয়াদে ইজারা না দিয়ে আগের মেয়াদের সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ট্রাক চালক আশরাফুল বলেন, দূরত্ব কম হওয়ায় আমরা আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে যাতায়াত শুরু করেছি। পাবনার কাজিরহাটে একবার ৭৫ টাকা টার্মিনাল চার্জ দিয়ে এসেছি। ফেরি পার হয়ে আরিচা ঘাটে নামার পর সড়কে ট্রাক আটকে টার্মিনাল চার্জের নামে আবারও জোর করে ৫০ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে। না দিলে আমাদের মারধর করতে আসে। কোনো নিরাপত্তা নেই। ট্রাক চালক সোহেল রানা বলেন, আমাদের দুই বার করে টার্মিনাল চার্জ দিতে হচ্ছে। এ রকম নিয়ম আর কোথাও দেখি নাই। ট্রাক চালক ইব্রাহিম বলেন, ইজারাদারের লোকজনের সামনে পড়লেই পার্কিং চার্জের জন্য গাড়ি আটকে রাখে। টাকা না দিলে ইজারাদারের লোকজন মারধর করে। এছাড়া, ট্রাক চালক শাহিন ও মাসুম বিল্লাহসহ অন্তত ৫০ জন ট্রাক চালক এমন অভিযোগ করেছেন।
এদিকে পিকআপ চালক রমজান আলী বলেন, আমরা স্থানীয়। লোকালে ট্রিপ মারি। যতবার বের হই, ততবারই আমাদের পার্কিং চার্জ দিতে হয়। না দিলে তাদের হাতে নাজেহাল হতে হচ্ছে। ইজারাদারের লোকজন আমাদের সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যাবহার করে। সড়কে গাড়ি থামিয়ে অবৈধ চাঁদাবাজির বিষয়ে শিবালয় থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. ফিরোজ কবির বলেন, আমার কাছে অনেকেই অভিযোগ করেছে। আমি ইজারাদারকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে ইজারাদার কাগজপত্র দেখিয়ে বলেন, তিনি বৈধভাবে টাকা আদায় করছেন। এটা বিআডব্লিউটিএর ব্যাপার। কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করে, আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।
বিআইডব্লিউটিএর পোর্ট অফিসার মাসুদ পারভেজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ। এ বিষয়ে কথা বলব না। আপনি অফিসে যোগাযোগ করেন।’