গণপরিবহনে নিয়ম মানছে না কেউ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৯ এএম, ১৯ আগস্ট,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:২৬ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কোনও নিয়মই মানা হচ্ছে না রাজধানী ঢাকায় চলাচলরত গণপরিবহনে। সাধারণ যাত্রী থেকে শুরু করে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা কেউই তোয়াক্কা করছে না কোনো নিয়মনীতির। দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি মাস্ক ছাড়াও যাত্রী উঠানো হচ্ছে। এছাড়া অর্ধেক গণপরিবহন চলাচলের কথা থাকলেও, তেমন কোনো নমুনা টের পাওয়া যাচ্ছে না। চলাচল করছে স্বাভাবিক সময়ের মতোই। ফলে সড়কে বাড়ছে যানজটও। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। সকালে অফিস সময়ে বাসাবো এলাকায় দেখা গেছে, বাস আসা মাত্রই হুড়োহুড়ি করে গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন যাত্রীরা। প্রতিটি গাড়িতেই অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। গাড়ির মধ্যে দাঁড়িয়েও রয়েছেন বেশ কিছু যাত্রী। হেল্পাররা কোনও বাধা দেয়া দূরে থাক, বরং ঠেলে আরো যাত্রী তুলছেন। ভাড়া বেশি নেয়ারও অভিযোগ করেছেন কিছু যাত্রী। এ সময় রাইদা পরিবহনের একটি বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতে দেখা গেছে। জানতে চাইলে বাসটির হেলপার বলেন, আমরা অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে চাই না। মানুষকে মানানো যাচ্ছে না। জোর করেই তারা বাসে উঠে যাচ্ছে। তাদের কারণে আমরাও ঝুঁকিতে থাকি। সার্জেন্ট দেখলে মামলা করে দেয়। তবে এই হেলপারের কথা মানতে নারাজ বাসের আসনে বসে থাকা যাত্রীরা। তারা বলছেন- কোনও আসন খালি না থাকলেও হেলপার ডেকে ডেকে যাত্রী তুলছে। টাকার জন্যই তারা এই অনিয়ম করে যাচ্ছে। দুপুরের দিকে মিরপুর, শ্যামলী, শেওড়াপাড়া, ফার্মগেট, শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, মগবাজার ও পান্থপথসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায়ও একই চিত্র দেখা গেছে। তবে গত শুক্র, শনি, রবিবার সরকারি ছুটি থাকায় পরিবহনের সংখ্যা তেমন একটা দেখা যায়নি। অফিস চালুর পর সোম ও মঙ্গলবার রাস্তায় ছিলো অসহনীয় যানজট। হেলপাররা সেই পুরাতন অভ্যাসেই টেনে টেনে বাসে যাত্রী তুলছেন। বাসগুলোতে যাত্রা শেষে জীবাণুনাশক স্প্রে করার নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না কেউ। এর আগে গত ১১ আগস্ট থেকে সারা দেশে আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। ওই দিন থেকে গণপরিবহনের সব আসনে যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দেয়া হয়। তবে তা হবে মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক। কিন্তু নগরীতে সব পরিবহনই চলছে। মালিকরা তাদের অর্ধেক বাস বন্ধ রাখেনি।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম পরিবহনের অর্ধেক সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন হবে। এক্ষেত্রে এক মালিকের কয়টি গাড়ি আছে বা কতটি গাড়ি চালাচ্ছে, দেশব্যাপী এ বিষয়টি নির্ণয় করা একদিকে যেমন কঠিন হবে, অন্যদিকে শ্রমিকেরাও বেকার থাকবে। তাদের কষ্ট লাঘব হবে না। মালিকেরাও ব্যবসায়িকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাছাড়া যার একটি মাত্র গাড়ি আছে তার অবস্থা কি হবে? অর্ধেক গাড়ি চলাচল করলে পরিবহন সংকট দেখা দেবে এবং যাত্রীর চাপ বাড়বে। এতে করে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। এসব দিক বিবেচনা করে মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চলাচলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সকল গাড়ি চলাচলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমরা সরকারের নিকট আবেদন করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, সব মালিক ও চালকদের সরকারের নির্দেশ পালন করে পরিবহন পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যারা অনিয়ম করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর অতিরিক্ত যাত্রী নিলে সড়কে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। তারাও বিষয়টি দেখবে।