এডিসের লার্ভায় সয়লাব রাজধানী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৭ এএম, ৭ আগস্ট,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:০৪ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪
রাজধানীর প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকায় এডিসের ঘনত্ব আশঙ্কাজনক। মৌসুমি জরিপের দুই তৃতীয়াংশ শেষে এমনটিই জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যেখানে বর্ষা শুরুর আগের জরিপে এই হার ছিল পঁচিশ ভাগের কম। বর্ষার ধরন আর অসচেতনতাকে এর জন্য দায়ী করছেন তারা।
ডেঙ্গু বাহক এডিসের ঘনত্ব কেমন তা জানতে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে ও এর আগে-পরে তিন দফায় জরিপ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চলতি বর্ষাতেও শুরু হয়েছে মৌসুমি জরিপ। মিলছে এডিসের লার্ভা।
জরিপে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে এমন এক বাড়ির মালিক বলেন, অবশ্যই এটা আমাদের ভুল। বাড়ির কেয়ারটেকার নেই, সে জন্য তো এভাবে ফেলে রাখা ঠিক হয়নি আমাদের। নিজেদের পরিষ্কার করা উচিত ছিল।
জরিপকারীরা বলছেন, প্রধানত পরিত্যক্ত টায়ার ও ড্রামের জমে থাকা পানির মধ্যেই এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আর কনস্ট্রাকশন এলাকায় তো সব সময় পাওয়া যাচ্ছে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৯৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯৬টি ওয়ার্ডে একটি করে এলাকা। উত্তরা আর ধানমন্ডিতে দুটি এলাকা নিয়ে দশদিনে ১০০টি এলাকায় হয় এই জরিপ। প্রতিটি এলাকায় আবার ৩০টি বাড়ি দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে নির্ণয় করে সেখানে খোঁজা হয় লার্ভা। সেখান থেকে ব্রটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি পেলেই তাকে আশঙ্কাজনক হিসেবে ধরা হয়। প্রতি এলাকায় পাওয়া ১০০টি, পাত্র, কিংবা স্বচ্ছ পানি জমে আছে এমন জায়গায় ২০টিতে এডিসের লার্ভা মিললে তাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এবারের বর্ষায় সাতদিনের জরিপ শেষে অধিদপ্তর বলছে, প্রায় ৭০ ভাগ এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। বর্ষার আগের জরিপে যা ছিল প্রায় ২৫ ভাগ এলাকায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কিটতত্ত্ববিদ মো. খলিলুর রহমান বলেন, গত সাতদিনে আমরা ৭০টি ওয়ার্ডে জরিপ করেছি। এর মধ্যে ৭০ ভাগ এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। যে এডিস মশা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গু হওয়ার মতো অনুকূল পরিবেশ রয়েছে।
অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা বলছে, এবারের বর্ষার ধরন আর অসচেতনায়ই বাড়ছে এডিসের প্রকোপ, বাড়ছে ডেঙ্গু।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিপিএম (ডেঙ্গু) ডা. আফসানা আলমগীর খান বলেন, দু-তিনদিন ধরে বৃষ্টি নেই, আবার দু-তিনদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এমনটি আগে কখনো দেখা যায়নি। যদি এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণ খোঁজা হয়, তাহলে এটাও একটা।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আরও জনসম্পৃক্তরা নিশ্চিত করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার শঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।