আলো-বাতাস আর খাবারের অভাবে কাঁটাবনে প্রায় ৫০০ পশুপাখির মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৪ এএম, ১ আগস্ট,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৭ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
লকডাউন যেন মৃত্যু ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে কাঁটাবনের পশুপাখিদের জন্য। দোকান বন্ধ থাকায় আলো, বাতাস আর খাবারের অভাবে এরই মধ্যে মারা গেছে প্রায় ৫শ পশুপাখি। খাঁচাবন্দি এসব প্রাণীর মৃত্যুর জন্য ব্যবসায়ীদের অমানবিক আচরণকে দুষছেন পরিবেশবাদীরা। লকডাউনে দিন কিংবা রাত কাঁটাবনের রাস্তা দিয়ে গেলেই, অবুঝ প্রাণীগুলোর আর্তনাদে, যে কারও হৃদয় দুমড়ে-মুচড়ে যাবে। একে তো খাঁচায় বন্দি, তার ওপর দোকান বন্ধ।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, প্রতিটা মুহূর্ত কাটে অন্ধকারে। অন্যসময় উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য মনিবের কাছে বিশেষ কদর থাকলেও দুঃসময়ে কেউ খোঁজও রাখে না। দিনের পর দিন আলো, বাতাস, খাবার না পেয়ে মৃত্যুই যেন শেষ ঠিকানা। বন্ধ দোকান খুলতেই অবলা কুকুরটির আত্মচিৎকারই জানান দিচ্ছে অন্ধকার জীবনের পাশাপাশি ক্ষুধার যন্ত্রণা কতটা কষ্টের। নিস্তেজ শরীরে কেবলই বাঁচার আশা।
অভুক্ত থাকায় খাঁচায় বন্দি ছোট্ট পাখিটিও বড্ড ক্লান্ত, মাথা তোলার ক্ষমতা নেই। পাশ থেকে সঙ্গী পাখি দুটি অভয় দিচ্ছে অনবরত। একই চিত্র রাজধানীর বৃহত্তম পোষা প্রাণীর মার্কেট কাঁটাবনের অন্যান্য দোকানেও। নিয়মিত খাবার না দিয়ে চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিচ্ছে পোষা প্রাণী বিক্রেতারা।
প্রাণী বিক্রেতারা বলেন, আমরা নিজেরা না খেলেও পশুপাখিকে খাবার দিচ্ছি। লকডাউনে দোকান না খোলার কারণে অনেকগুলো পাখি মারা গেছে। এক বেলায় যদি ৩ বেলার খাবার দেয়া হয় তা হলে পশুপাখি অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি থাকে। কঠোর লকডাউনে মানবিক দিক বিবেচনায় পশুপাখিদের যত্ন নিতে সকাল-বিকেল ২ ঘণ্টা করে সময় বেঁধে দেয় মন্ত্রণালয়। তবে এমন সিদ্ধান্ত খুব একটা কাজে আসবে না বলে জানায় মার্কেট কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেট মালিক সমিতির সভাপতি আতিয়ার রহমান রিপন গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে আমাদের যে সময় দেয়া হয়েছে এই সময়ে আসলে পশুপাখি এবং অ্যাকোরিয়ামের জন্য যথেষ্ট নয়। অ্যানিম্যাল কেয়ার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা আফজাল খান (রবিনহুড) বলেন, মানুষের মতো পশুপাখিদেরও দীর্ঘ সময় আবদ্ধ থাকা সম্ভব নয়। অবলা প্রাণীদের মৃত্যুর দায় দোকান মালিকরা কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। অসহায় প্রাণীগুলো যাতে অবহেলার শিকার না হয়, সেজন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার দাবি পরিবেশবাদীদের।