কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিনে মোড়ে মোড়ে তল্লাশি, হাঁটছে মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০২ এএম, ২৬ জুলাই,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০১:১৭ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
দেশব্যাপী লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকা প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় নতুন করে আরোপিত ‘সবচেয়ে কঠোর লকডাউনের’ তৃতীয় দিন গতকাল রবিবার। দেখা যায়- রাজধানী ঢাকায় সড়কে জরুরি প্রয়োজনে অনুমোদিত যানবাহন চলাচল করছে, ইঞ্জিনচালিত কোন গণপরিবহন চোখে পড়েনি। মাঝেমাঝে দু-একটা রিকশার দেখা পাওয়া যাচ্ছে। তবে পায়ে হেঁটে সড়কে হাঁটতে দেখা গেছে অনেককেই। চেকপোস্টগুলোতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের মুখোমুখি পায়ে হেঁটে বের হওয়াদের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ হতে দেখা গেছে। কিছুক্ষণ পরপরই র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সেনাবহিনী ও বিজিবি’র মোবাইল টহল লক্ষ্য করা গেছে। ৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত এই কঠোর বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। এসময় খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হলে তাকে শাস্তির আওতায় আনার কথা বলেছে প্রশাসন। বিধিনিষেধ চলাকালে জনগণকে সতর্ক থাকা, মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশ দেয়া হয়।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, বিধিনিষেধ ‘আগের চেয়ে কঠোর’ হবে। বিধিনিষেধ কার্যকর করতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্যরা মাঠে তৎপর রয়েছেন। গত ১৩ জুলাই বিধিনিষেধ আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই আদেশে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছিল ঈদের কারণে। ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে নতুন করে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল ওই ঘোষণায়। কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিন গত শুক্রবারে (২৩ জুলাই) ঢাকায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ৪০৩ জন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, লকডাউন অমান্য করে অহেতুক ঘোরাফেরা করায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২০৩ জনকে ১ লাখ ২৭ হাজার ২৭০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান জানান, করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারি সবচেয়ে কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিনে সারাদেশব্যাপী র্যাবের ১৬৮টি টহল ও ১৫৮টি চেকপোস্ট পরিচালনা করা হয়। বিনা প্রয়োজনে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে র্যাবের জনসচেতনামূলক মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি চলমান ছিল। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। বিধি-নিষেধ অমান্য করায় সারাদেশে পরিচালিত ১২টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে সর্বমোট ৯৫ জনকে ৪৮ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বিনামূল্যে এক হাজারের বেশি মাস্ক বিতরণ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করে র্যাব। সবচেয়ে কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিন গতকাল শনিবার (২৪ জুলাই) অযথা ঘরের বাইরে বের হওয়ায় ঢাকায় ৩৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৩৭ জনকে মোট ৯৫ হাজার ২৩০ টাকা জরিমানা করেছেন। ট্রাফিক বিভাগ ৪৪১টি যানকে মোট ১০ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অন্যদিকে কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে গতকাল শনিবার সারাদেশে ১৮৬টি চেকপোস্ট পরিচালনা করে র্যাব। এ সময় টহল দেয় র্যাবের ১৮০টি দল। জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডের পাশাপাশি র্যাবের ২৭টি ভ্রাম্যমাণ আদালতও অভিযান চালায়। বিধিনিষেধ অমান্য করায় ২১২ জনকে ১ লাখ ৯১ হাজার ৪৭০ টাকা জরিমানা করা হয়।