২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ১০৪ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে : ভর্তি ৪২২ রোগী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৬ এএম, ২৫ জুলাই,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:০৪ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
রাজধানীতে এডিস মশাবাহী রোগ ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেই গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে চলতি বছরের রেকর্ড সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তারা সবাই ঢাকার বাসিন্দা।
আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১০৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ ৮৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল শুক্রবার (২৩ জুলাই)। এ নিয়ে জুলাই মাসের ২৪ দিনেই ১ হাজার ২০২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের ৯৯ শতাংশই ঢাকায়।
অধিদফতর জানিয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ৪২২ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই আছে ৪১৯ জন, বাকি ৩ জন ঢাকার বাইরে অন্য বিভাগে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ১৪৯ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ও মৃত্যু পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালগুলো রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে। তারা বলেন, বর্তমানে এডিস মশার প্রজনন কাল। এ সময় থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে। এই জমে থাকা পানিতে এডিস মশা লার্ভা ছাড়ে। ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশনের ডেঙ্গুর প্রজননস্থল ধ্বংসের পাশাপাশি ব্যক্তি ও পারিবারিক সচেতনতা বেশি জরুরি। বর্তমানে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৪২২ জনের মধ্যে রাজধানীর সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আছেন ৭২ জন। তাদের মধ্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৮ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালের ১৯ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ৪ জন, পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগে ১ জন, বিজিবি হাসপাতালে ১ জন এবং সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে রয়েছেন ৯ জন। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি আছেন ৩৩৭ জন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ২২ জন, বারডেম হাসপাতালে ৫ জন, ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতাল ১০ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ২৩ জন, শমরিতা হাসপাতালে ১ জন, ডেলটা মেডিকেল কলেজে ২ জন, ল্যাবএইড হাসপাতালে ৭ জন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ২৮ জন, গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ৩ জন, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল ৪৪ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ১২ জন, খিদমাহ হাসপাতাল ১৮ জন, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন, এভারকেয়ার হাসপাতালে ৭ জন, আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৩ জন, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১২ জন, বিআরবি হসপিটালস লিমিটেডে ৫ জন, আজগর আলী হাসপাতালে ১০ জন, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৬ জন, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন, সালাউদ্দিন হাসপাতালে ১৩ জন, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন এবং আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ জন ভর্তি রয়েছেন।