নুরসহ ৪ জনকে অব্যাহতি, সোহাগ-মামুনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৯ এএম, ১৫ জুন,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০১:০৭ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২৪
রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ ও একই সংগঠনের সাবেক আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। তবে এ মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতির আবেদন করেছে পুলিশ। অভিযোগপত্রে অব্যাহতি দেয়া অপর আসামিরা হলেন- বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হুদা এবং ঢাবি শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকি।
আজ সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত ৮ জুন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। সোহাগের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মামুনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে চার্জশিট দাখিল করেছি। ভিপি নুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে মামলার দায় হতে অব্যাহতির আবেদন করেছি। ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালী থানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতার অভিযোগে ভিপি নুরসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের সঙ্গে বাদীর পরিচয় হয় এবং তার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে আসামি হাসান আল মামুন বাদীকে শারীরিক সম্পর্কের ইঙ্গিত দেন। ফলশ্রুতিতে ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে বাদীকে আসামি হাসান আল মামুন তার বাসা লালবাগে যেতে বলেন। সেখানে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার পরদিন বাদী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে একই বছরের ১২ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসামি নাজমুল হাসান সোহাগের মাধ্যমে ভর্তি হন। এরপর থেকে আসামি হাসান আল মামুন আত্মগোপন করে। আসামি নাজমুল হাসান সোহাগ আসামি হাসান আল মামুনের সঙ্গে দেখা করে দেবে বলে গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে নাজমুল হাসান সোহাগ বাদীকে সঙ্গে নিয়া কোতয়ালী থানাধীন ৫৬৩/৫৬৬ মিউনিসিপাল হকার্স মার্কেট এলাকায় সদরঘাট হােটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে নিয়া যায়। সেখানে বাদীকে নাস্তা করায়। এরপর নাজমুল হাসান সোহাগ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে লঞ্চযোগে বাদীকে চাঁদপুর নিয়া যায়। চাঁদপুর পৌঁছানাের পর হাসান আল মামুনকে দেখতে না পেয়ে বাদীর সন্দেহ হয়। তখন নাজমুল হাসানকে দ্রুত ঢাকা ফেরার জন্য বলে। নাজমুল তাকে নিয়ে বিকেলে লঞ্চে কেবিনে অবস্থান করে। সেখানে নাজমুল হাসান তাকে ধর্ষণ করে। সে সময় বাদী কান্নাকাটি করলে নাজমুল হাসান সোহাগ তাকে নষ্ট মেয়ে বলে ভয়ভীতি দেখায় এবং কান্না করে লাভ হবে না বলে জানায়। গত বছরের ২৯ মে আসামি নাজমুল হাসান সোহাগ বাদীকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য অৎড়যর ংরসধ, ইধরংযধশর উধং নামক ফেক আইডি খুলে বিভিন্ন সেক্সুয়াল গ্রুপে বাদীর মোবাইল নাম্বার ছড়িয়ে দেয়। বাদিনী এ বিষয়ে গত বছরের ২০ জুন বিবাদী নুরুল হক নুরকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানান। পরে নুরুল হক নুর বাদীকে তার সঙ্গে কথা বলে সুব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পরে একই বছরের ২৪ জুন আসামি নুরুল হক নুর বাদিনীকে নীলক্ষেতে দেখা করার জন্য বলে। সেখানে আসামি নুরুল হক নুর তাকে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন এবং বাড়াবাড়ি করলে তার ভক্তদের দিয়ে তার নামে উল্টাপাল্টা পোস্ট এবং বাদী পতিতা বলে প্রচারের হুমকি দেন।