রাজধানীর বাজারে চাল, তেল, ডালের দাম চড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৬ এএম, ১২ জুন,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৩১ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪
রাজধানীর বাজারগুলোতে চাল, ডাল ও তেলসহ নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে বাড়তি সব ধরনের চালের দাম।
সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের অজুহাতসহ মিল মালিকদের নানা কারসাজির কারণেই চালের দাম বাড়তি বলে মনে করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। বাজারে বেড়েছে ভারতীয় মসুর ডালের দাম। ভোজ্যতেলও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই ।
এদিকে, ভারত ও মিয়ারমার থেকে আমদানি শুরু হওয়ায় বাজারে কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। তবে বাজারে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে আদার দাম। কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
স্বস্তির খবর নেই সবজির বাজারেও। সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা করে। বাজারে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে আদার দাম। কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
রাজধানীতে মাছ আর পেঁয়াজের বাজার গরম হয়ে উঠেছে। গত এক সপ্তাহে এই দুটি নিত্যপণ্যের দাম ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বেড়েছে ডিমের দামও। ঈদের পর বাজারের এই হঠাৎ অস্থিরতায় সাধারণ ক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর নিউমার্কেট, মীর জল্লাবাজার ও কাপ্তানবাজার ঘুরে এই প্রতিবেদক দেখেছেন, মাছের দাম পাল্লা দিয়ে বাড়িয়েছেন খুচরা ক্রেতারা। রুই-কাতলের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা বাড়ালেও ইলিশের মতো মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে শতাধিক টাকা। সামুদ্রিক মাছের দামও রয়েছে বাড়তির পথে।
সামুদ্রিক মাছের মধ্যে সবচেয়ে সস্তায় পাওয়া যায় ম্যাকারেল। স্থানীয় খুচরা বাজারে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত মাছটির দাম ছিল এতদিন। এখন এর দাম চাওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা করে। ২০ টাকার মতো বেশি চাওয়া হচ্ছে টুনা মাছের দাম। দেশি স্যামনের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা।
মিঠা পানির মাছের মধ্যে রুই, কাতল আর পাঙ্গাশের দাম খুব বেশি না বাড়লেও ইলিশের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। এক কেজি বা তার চেয়ে কিছুটা বড় আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে। ৮০০ গ্রাম বা এর চেয়ে কম ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। ক্রেতারা এই দামকে অবিশ্বাস্য ও অন্যায় বলছেন।
একজন ক্রেতা বলেছেন, ইলিশের এমন দাম আগে কোনোদিন শুনিনি। ইলিশ নিয়ে অতীতে অনেক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। তবে এবার এই মাছের যে দাম উঠেছে, তা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।
ইলিশ ছাড়াও দাম বেড়েছে শিং, মৃগেল, তেলাপিয়া আর সিলভার কার্পের। শিং মাছ প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, মৃগেল ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, সিলভার কার্প ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মাছের মধ্যে কাঁচকি ও মলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, দেশি ট্যাংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, বাইম ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা দাম চাওয়া হচ্ছে।
মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে মাছের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মাছের বাজার এমন অস্থির হয়ে উঠেছে।
এদিকে, প্রাণীজ আমিষের মধ্যে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৪০ টাকায় আর দেশি মুরগি আকৃতিভেদে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁস ও মুরগির ডিমের দামও হালিতে দুই টাকা বেড়ে মুরগি ৩২ টাকা এবং হাঁসের ডিম ৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
বাড়তির মিছিলে যোগ দিয়ে এই সপ্তাহে প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ ৬০ টাকা দর চাওয়া হয়েছে।
তবে এই সপ্তাহে চালের বাজার এখনো স্থিতিশীল রয়েছে। বোরো চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, আর মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। মিনিকেট ৫৮-৬০ টাকা এবং নাজিরশাইল ৬৫-৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজির বাজারও রয়েছে আগের মতোই। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবজির দাম কয়েক দিনের মধ্যেই বাড়তে পারে।