রাজধানীর সাততলায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের স্থায়ী বাসস্থানের দাবি ফখরুলের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৫ এএম, ৯ জুন,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:১১ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বস্তিবাসীদের জন্য স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানালেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহাখালী সাততলা বস্তিতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমার কথা হলো-সরকারের প্রথম প্রায়োরিটি হওয়া উচিত এদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা। এখানে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদেরকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে, কি কারণে আগুন লাগলো কেন লাগলো। এদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা কি করা যায়, তার জন্য অবশ্যই সরকারকে পরিকল্পনা নিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে ভাসমান মানুষ কেউ গৃহপরিচারিকার কাজ করে, কেউ রিকশা চালায়, কেউ বুট পালিশ করে। একেবারেই বাস্তুহারা ছিন্নমূল মানুষগুলো এই ধরনের বস্তিতে বসবাস করে। আজকে ৫০ বছর হয়ে গেল, কিন্তু মানুষের মৌলিক যে অধিকার, প্রতিটি মানুষের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা। অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান মানুষের মৌলিক অধিকার। দুর্ভাগ্য স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমরা সেটা করতে পারিনি। আজকে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার মেগা প্রজেক্ট করছে। ১০ হাজার টাকার প্রজেক্ট ৫০ হাজার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই ছিন্নমূল মানুষগুলোর জন্য কেউ কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। কঠিন কাজ নাতো। বাংলাদেশে সরকারের যে জমি, সেই জমিগুলোইতো বরাদ্দ করা যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আমাদের সঙ্গে আপনাদের এই এলাকার মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল আছেন। যদিও সরকারের নির্বাচন কমিশন তাদেরকে হারিয়ে দিয়েছে। তারপরও জনগণের নির্বাচিত মেয়র তাবিথ। আমি আশা করি আগামী ২/১ দিনের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সামান্য হলেও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহায়তা করবে। আমি আবারও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে তাদের স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যদি চালু না হয়, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আমরা যারা সমাজের জন্য কাজ করছি, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি তাদের কাজ হলো অবিলম্বে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনসী বজলুল বাসিত আনজু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম নকি, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকা মহানগর যুব দল উত্তর সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন আতিকুল হক মতিনসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনে নেতৃবৃন্দ ।
উল্লেখ্য, সোমবার (৭ জুন) ভোর ৫টার দিকে মহাখালী সাততলা বস্তিতে আগুন লাগে। আগুন লাগার পরই ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দীর্ঘ দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় সকাল ৭টার দিকে আগুনে নিয়ন্ত্রণে আসে। ভয়াবহ এই আগুন নেভাতে পার্শ্ববর্তী জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিটিউট, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালসহ বিভিন্ন জলাশয় থেকে পানি এনেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে, বাতাসে আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয়। আগুনে ঘর পুড়ে যাওয়া এক নারী বলেন, শুধু কোলের বাচ্চাটাকে নিয়ে বের হয়ে গেলাম, আমার সব পুড়ে গেল। আমার সব শেষ হয়ে গেল। আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, এখন আর ভিডিও করে কী হবে, আপনারা কিচ্ছু করতে পারবেন না, আমার বাড়ির সব পুড়ে গেছে, আমি নিজে আজকে লাশ হয়ে যেতাম। সাততলা বস্তিতে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার ঘর ছিল। বেশির ভাগ স্থাপনাই এখন এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।