দেশে প্রতি মাসে ১০৮ ধর্ষণ!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১৮ এএম, ২৫ নভেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ১২:৫৩ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
দেশে গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ৯৭৫ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ হিসেবে প্রতি মাসে প্রায় ১০৮ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২০৮ টি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া এই ৯ মাসে ২০০ জন নারী ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন। আর যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১৬১ জন নারী। ধর্ষণের পর ৪১ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন নারী।
আজ মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) ১১টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবর বিশ্লেষণ করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতনের প্রতিরোধ জোট’ নামের একটি সংগঠন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নির্বাহী সমন্বয়ক জিনাত আরা হক বলেন, দেশে যৌন হয়রানির কারণে ১২ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। আর ৩ নারী ও ৯ জন পুরুষ যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় খুন হয়েছেন। এছাড়া গত ৯ মাসে শিশু নির্যাতন ও হত্যার এই পরিসংখ্যান অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ সময়ে ৬২৭ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে এছাড়া ২০ শিশু বলাৎকারের শিকার হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৭৮টি শিশু শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আর হত্যার শিকার হয়েছে ৪৪৫টি শিশু। প্রতিবেদন তুলে ধরে জিনাত আরা আরও বলেন, ৪৩২ জন নারী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২৭৯ জন নারী হত্যার শিকার আর পারিবারিক কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৭৪ জন নারী। যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৬৮ জন নারী। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৭৩ জন । আর যৌতুকের দাবিতে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার শিকার হয়েছে ৬৬ জন। আর এ নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে জোটের নেতৃবৃন্দ নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ এবং তাদের নির্যাতনের মামলা ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তিসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে।
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- উচ্চ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে, বিচার চলাকালে নির্যাতনের শিকার নারী, শিশু ও পরিবারের নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় সাক্ষী প্রদান প্রক্রিয়া যুগোপযোগী করা, হাইকোর্টের দেয়া ২০০৯ সালের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কার্যকর ব্যবস্থা করা, পারিবারিক নির্যাতন (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ সফল করা এবং ধর্ষণ, যৌন সহিংসতা, নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকারকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা, নারী নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করা ও সকল প্রকার বৈষম্যমূলক আইন এবং নারী নির্যাতন বিরোধী আইনকে সংশোধন করে সময়োপযোগী করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের উপদেষ্টা মাহফুজা খানম ও কো-চেয়ারম্যান শাহীনা আনাম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। এসময় নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার ৫টি পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।