কার্টুনিস্ট কিশোরের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পায়নি মেডিকেল বোর্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৩ এএম, ৭ জুন,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:১৫ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে আদালতকে জানিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।
আজ রবিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল প্রতিবেদন জমা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘মেডিকেল রিপোর্ট জমা হওয়ার কথা শুনেছি। তবে তাতে কী আছে আমি বলতে পারছি না। আপনি জেনেছেন যে, আপনার শরীরে নির্যাতনের কোনো চিহ্ন আছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, আপনার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আপনার মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া কী?’ কাটুনিস্ট কিশোর টেলিফোনে বলেন, ‘দেখেন, এখানে আমি কী বলবো? আমার কিছু বলার নেই। আমাকে যখন ধরে নিয়ে যায়, তখন আমি সুস্থ ছিলাম। একজন সুস্থ সবল কর্মঠ মানুষ পরিশ্রম করে এদেশে বেঁচে ছিলাম। এখন আমার যা যা সমস্যা হয়েছে নির্যাতন করার কারণে হয়েছে। কীভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, তা আমি জামিনে মুক্ত হওয়ার পর গণমাধ্যমের সামনে বিস্তারিত বলেছি। আমার বলা একটি কথাও অসত্য না। ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। সেখানে উন্নতমানের যন্ত্রপাতি দিয়ে আমাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা করা হয়েছে। আঘাত করে আমার ফাটিয়ে দেয়া কানে বিশেষ ধরনের একটি যন্ত্র বসানো হয়েছে। তবুও কান কিন্তু পুরোপুরি ঠিক হয়নি। কোনো সুস্থ মানুষের কানে এমন যন্ত্র বসানো হয়? কোনো দিন শুনেছেন? কানের ভেতরে সেই যন্ত্র তো এখনো আছে। ল্যাবএইডের ডাক্তাররা পরীক্ষা করেছে, আঘাত অনুযায়ী চিকিৎসা দিয়েছে। এখনো চিকিৎসার মধ্যেই আছি। পায়ের ব্যথায় এখনো ঠিকমতো হাঁটতে পারি না। পায়ের ব্যথা তো আঘাতের কারণেই। চোখে একটি অপারেশন হয়েছে, সম্ভবত আরও একটি অপারেশন করতে হবে। শুধু নির্যাতন-আঘাতের চিহ্ন নয়, দানবীয় আঘাতের যন্ত্রণা নিয়েই বেঁচে আছি। মেডিকেল বোর্ড কেন এসব দেখতে পেলেন না, কেন আঘাতের চিহ্ন খুঁজে পেলেন না, তারা বলতে পারবেন। এ বিষয়ে আমার প্রতিক্রিয়া দিয়ে কী হবে!’
আদালত সূত্র বলছে, গত ২০ মার্চ ঢামেক হাসপাতালের নাক-কান-গলা (ইএনটি) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমি, অর্থোপেডিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. ফখরুল আমিন খান ও মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. হাফিজ সর্দার প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, কার্টুনিস্ট কিশোরের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা এখনো অবগত না। মেডিকেল রিপোর্ট জমা দেয়ার বিষয়ে শুনেছি, কিন্তু এর কপি আমরা হাতে পাইনি। হাতে পেলে পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’