মুশতাকের মৃত্যু : আটক বিক্ষোভকারীদের মুক্তি চায় আসক

কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা এবং বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। 

আজ রবিবার আসক থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদুনে গ্যাসের সেল নিক্ষেপ এবং পরবর্তী সময়ে বিক্ষোভকারী ছাত্রনেতাদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে লেখক মুশতাককে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে খুলনায় বাসদ নেতা রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারসহ তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। একই সঙ্গে রুহুল আমিনসহ গ্রেফতারকৃত আন্দোলনকারীদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবি জানায়।

বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলায় কারা হেফাজতে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে বিভিন্ন বাম সংগঠনের আয়োজিত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন রাতে বিক্ষোভকারী ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ৭ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে লেখক মুশতাককে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে খুলনায় বাসদ নেতা রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারসহ তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।  

আসক মনে করে, বর্তমানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্রের দমন-নিপীড়নের সুবিধার্থে ক্রমান্বয়ে মানুষের মুক্তচিন্তার অধিকার হরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রায়ই বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও তাদের নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে যা সংবিধানে স্বীকৃত সভা-সমাবেশের অধিকারের লঙ্ঘন। এভাবে মানুষের মতপ্রকাশ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করার অধিকার চরমভাবে লঙ্ঘন করা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক আচরণ নয়। আসক এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়।  

আসক থেকে একটি প্রতিনিধি দল লেখক মুশতাকের মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য ২৭ ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তাদের দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে করোনার কারণে দেখা করা সম্ভব নয় বলে কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়।  
আসক আবারো কারা হেফাজতে লেখক মুশতাক আহমদের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত নিশ্চিত করার এবং একই মামলায় কারাবন্দি কিশোরের মুক্তি দেয়ার দাবি জানান।