শিবগঞ্জে সাব-রেজিস্টার তৌহিদুল ইসলাম রুবেলের রমরমা ঘুষ দুর্নীতি আর দলিল বাণিজ্য!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪৪ পিএম, ১০ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৬:১৭ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে চলছে সাব রেজিস্ট্রার তৌহিদুল ইসলাম রুবেলের রমরমা ঘুষ দুর্নীতি আর দলিল বাণিজ্য। এখানে সাব রেজিস্ট্রার এর নামে সমস্ত ঘুষের টাকা উত্তোলন হয় তার কথিত সহকারী ও কতিপয় দলিল লেখক সমিতির নেতাদের হাত ধরে। সেই টাকায় আবার দিনশেষে মিডিয়া ও অফিস ম্যানেজের নামে একাংশ রেখে অবশিষ্ট অংশ তুলে নেন সাব রেজিস্ট্রার নিজের ব্যাগে। এ অফিসে সাব রেজিস্ট্রারই সর্বেসর্বা। তার নির্দেশ ছাড়া মেলেনা সেবা, নড়েনা ফাইল।
শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো জমিই রেজিস্ট্রি হয় না বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। "কাগজপত্রে সমস্যা আছে" এ কথা বলে জমি ক্রেতা-বিক্রেতার কাছে দাবি করা হয় মোটা অংকের ঘুষ। না দিলে জমি রেজিস্ট্রি দেওয়া হয় বন্ধ করে। অফিসের কেরানী থেকে শুরু করে সাব রেজিস্ট্রার সবাইকে ঘুষ দিতে সুকৌশলে বাধ্য করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি ‘ফি’ এর বাইরে কথিত সহকারীকে দিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। ফ্রেশ জমিকে ডোবা, নালা, পতিত ও ধানী জমি বলে মোটা অংকের নজরানা নিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়।
সবমিলে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে শিবগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিস। ভুক্তভোগীরা জানায়, বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার তৌহিদুল ইসলাম রুবেল এই অফিসে যোগদান করেই অবৈধ উপায়ে দু’হাতে অর্থ উপার্জনে বেপরোয়া হয়ে উঠেন।
সূত্র জানায়, সাব রেজিস্ট্রার প্রতিমাসে ২৫-৩০ লাখ টাকা অবৈধ উপায়ে উপার্জন করেন। শুধু মাত্র কোন কোন দিন ৫ লাখ টাকাও অবৈধ পথে উপার্জন করেন এই কর্তা। টাকার কিছু অংশ দিয়ে সবাইকে ম্যানেজ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কাউকে পরোয়া করেন না। বরং দাম্ভিকতার সুরে বলেন, তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো এ্যাকশন নিতে পারবেনা। কারণ তিনি সব জায়গাতেই সিস্টেম করে ম্যানেজ করে চলেন। জমি রেজিস্ট্রেশনের কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকার পরও দলিলপ্রতি নির্ধারিত হারে সহকারীর মাধ্যমে সাব রেজিস্ট্রারকে মোটা অংকের ঘুষ দিতে হয়। এ অফিসে দলিলপ্রতি নির্ধারিত হারে উৎকোচ দেয়াটা নিয়মে পরিণত হয়েছে।
সচেতন এলাকাবাসীর দাবি, প্রতিদিন অফিস সময়ের পরে ঘুষ/উৎকোচের টাকা নিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযান পরিচালনা করলে সাব রেজিস্ট্রার ও তার কথিত সহকারীকে হাতেনাতে ঘুষের টাকাসহ আটক করা সম্ভব। এছাড়া দুদকের অভিযানে দুর্নীতিবাজ সাব রেজিস্ট্রার ও তার কথিত সহকারীর কোটি কোটি টাকার বেপরোয়া দুর্নীতির চিত্র বেরিয়ে আসবে। তার অনৈতিক উৎকোচ গ্রহণের কারণে রেজিস্ট্রেশন বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
সাব রেজিস্ট্রারের পক্ষে তার কথিত সহকারী জেলা রেজিস্ট্রার, আইজিআর অফিস ম্যানেজ করে এইসব বেপরোয়া কর্মকাণ্ড চালান।
এ ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও আইজিআর মহোদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।