টাঙ্গাইলে সাড়ে ৩ কোটি টাকার সেই সেতুতে বাঁশ ও কাঠের পাইল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০২ পিএম, ২৫ জুলাই,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৪৬ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সাড়ে তিন কোটি টাকার সেতু দেবে গেছে। ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে কোনো নিয়ম মানা হয়নি। সেতুর গার্ডার ও স্লাবের সেন্টারিং কাজে স্টিলের পাইপের পরিবর্তে বাঁশ ও কাঠের পাইল ব্যবহার, ঠিকাদারের দায়িত্বে অবহেলা ও সাইটে ঠিকাদারের প্রকৌশলী অনুপস্থিতিসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে সেতুটি ধসে পড়েছে। টাঙ্গাইলের লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল রোববার (২৪ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযানে গিয়ে দেখতে পায় সেতুর মাঝখানে দেবে গেছে।
এ সময় টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমি দুদককে জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার সতর্ক করা হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি তা অগ্রাহ্য করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে গেছে।
আর স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী একটি মহল এই অনিয়মের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শফিউল্লাহ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগসাজশ করে ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয় সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।
টিমের অপর সদস্যরা হলেন- কোর্ট পরিদর্শক মো. জাহিদুল ইসলাম, উপ-সহকারী পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ ও মো. জাহেদ আলম। একটি এনফোর্সমেন্ট টিম টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বেড়াডোমা-ওমরপুর সড়কের বেড়াডোমা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন প্রতিবেদন দাখিল করবে।
দুদক জানায়, অভিযান পরিচালনার সময় টিম দেখতে পায়, নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ব্রিজটি মাঝখান দিয়ে দেবে দেবে গেছে। স্পেসিফিকেশন বহির্ভূতভাবে সেতু নির্মাণ, গার্ডার ও স্লাবের সেন্টারিং কাজে স্টিলের পাইপের পরিবর্তে গজারি, ইউক্যালিপটাস ও বাঁশের পাইল ব্যবহার, ঠিকাদারের দায়িত্বে অবহেলা ও সাইটে ঠিকাদারের প্রকৌশলী অনুপস্থিতিসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় টাঙ্গাইল শহরের বেড়াডোমা এলাকায় সেতু নির্মাণ করছে। ৮ মিটার প্রস্থ ও ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর থেকে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করে।
গত ১১ মে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। জুনের মাঝামাঝি সময়ে সেতুটির ওপরের অংশে ঢালাই করা হয়। কিন্তু ১৬ জুন রাতে সেতুটির মাঝখানের সাটারিং সরে গিয়ে সাড়ে তিন ফুট দেবে যায়। ফলে নির্মাণাধীন সেতুটি ভেঙে নতুন করে আবার করতে হবে।