বাংলাদেশের খুন-গুমের ঘটনাবলি এখন জাতিসংঘের দরবারে
আলী মামুদ, দিনকাল
প্রকাশ: ১০:৪২ পিএম, ১৩ জুলাই,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৫৬ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
গত এক দশকের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনাবলি অবশেষে জাতিসংঘের দরবারে গড়িয়েছে, যা এখন বাংলাদেশ সরকারের মাথা ব্যথার কারণ। জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বিষয়গুলো জানে। তারপরও বাংলাদেশ সরকারের লিখিত বক্তব্য জানতে চায়। আগামী ১৫ জুলাইয়ের আগেই তা হাতে পেতে চায় তারা। কিন্তু তা না পেলে আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের মহাসচিব যে বাৎসরিক রিপোর্ট (মানবাধিকারবিষয়ক) পেশ করতে যাচ্ছেন তাতে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ বাদ পড়বে। এর অর্থ হবে ভয়াবহ।
বিষয়টি জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টির গুরুত্বানুযায়ী সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যথাসময়ে জাতিসংঘের যথাযথ দফতরে চিঠি পাঠাবে বলেই আশা করা যায়। দেশের প্রখ্যাত মানবাধিকার সংগঠক নূর খানের মতে, নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনসহ দেশব্যাপী যেসব গুম-খুনের ঘটনা ঘটেছে তা অস্বীকার করার মতো নয়। আদালতেও এসব ঘটনা উঠেছে।
সাবেক এমপি ও ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন বলেন, জাতিসংঘের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সত্য ঘটনাগুলো জানানো উচিত বলে আমি মনে করি।
ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন জারির পর পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, গুম খুন কমেছে বলা হচ্ছে। তাই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সুবিচার আসবে বলে আশা করা যায়। এসব সম্পর্কে জাতিসংঘ যা জানতে চেয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের তা দিতে অসুবিধা থাকার তো কথা নয়।
উল্লেখ্য, অফিস অব দ্য ইউনাইটেড নেশন্স হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ও এইচ সি এইচ আর) এর চিঠিতে বলা হয়, জাতিসংঘ মহাসচিবের রিপোর্টে ১ মে ২০২১ থেকে ৩০ এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত সময়কালে বিভিন্ন দেশে সংঘটিত মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর ঘটনাগুলো স্থান পাবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্য দেয়ার সুযোগ রয়েছে।
অধিকার ভিকটিম : জাতিসংঘের এই চিঠিতে ৭৬টি গুমের ঘটনার আপডেট জানতে চাওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গুম ব্যক্তিদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবরের নামে ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা রয়েছে। ‘অধিকার’ নামের একটি এনজিও এ বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে ভিকটিম হয়েছে সম্প্রতি। এর আগে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম প্রমুখের গুমের কাহিনি আজও মানুষের মুখে মুখে। তারা জীবিত না মৃত জানে না তাদের পরিবারবর্গ।
বিশিষ্টজনেরা উদ্বিগ্ন : এ সম্পর্কে প্রখ্যাত মানবাধিকার সংগঠক নূর খান মিডিয়ায় বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, খুন বা গুমের ঘটনা বাংলাদেশে বহুল প্রচারিত। গুম হওয়ারা ফিরে আসেনি। তাদের পরিবার ও স্বজনেরা তাদের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বিএনপির অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, বাংলাদেশে খুন-গুমের ঘটনার পেছনে রয়েছে ভীতি সৃষ্টি। ত্রাস সৃষ্টি। জাতিসংঘের উদ্যোগে যদি সুব্যবস্থা নেয়া হয় তাহলে গুমের শিকারদের পরিবারে স্বস্তি ফিরে আসবে।
ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ বলেন, বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে চায়, খুন-গুমের কারণে সেই শান্তি নেই। এই গুম-খুনের শিকার পরিবারদের সরকারের নিরাপত্তা দেয়া উচিত।