১৯৯৪ সালে যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন হরতাল করেছিল আ'লীগ
আলী মামুদ, দিনকাল
প্রকাশ: ০৫:১৩ পিএম, ১১ জুন,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:২৪ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
১৯৯৪ সালের ১০ এপ্রিল দুই হাজার আটাশ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার যমুনা বহুমুখী সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করেছিল আওয়ামী লীগ। সেদিন জাপানি প্রতিনিধিদলের উপস্থিতিতে যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু সেদিন দেশব্যাপী হরতাল পালন করায় দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল।
এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, যমুনা সেতুর মতো একটি জাতীয় সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিনে হরতাল পালন আজও একটি নিন্দনীয় কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ড. আসাদুজ্জামান রিপন একটি স্যাটেলাইট টিভির আলোচনায় বলেন, যমুনা ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর অর্পণের দিনে হরতাল পালনের কথা মানুষ ভোলেনি।
উল্লেখ্য, যমুনা বহুমুখী সেতু দেশের প্রথম বৃহৎ সেতুই নয়, দুটি বিভাগ রাজশাহী ও রংপুরের মানুষের সড়ক ও রেলপথে যাতায়াতে প্রভূত সুবিধা করে দিয়েছে। সড়ক পথে যোগাযোগে প্রভূত উন্নতি হয়েছে। রেলপথে চলাচলেও উন্নয়ন ঘটেছে। চট্টগ্রাম নৌ বন্দর থেকে শুরু করে রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত রেলওয়ে নেটওয়ার্ক স্থাপন হয় আজ থেকে প্রায় ৩ দশক আগে। কিন্তু সেই যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন দেশব্যাপী হরতাল পালন করার সময় মানুষের মনে ব্যাপক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশের তারিখ গ্রন্থ থেকে : সাবেক প্রধান বিচারপতি ও প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান শেলী লিখিত ‘বাংলাদেশের তারিখ’ গ্রন্থে (প্রকাশক : আহম্মদ মাহমুদুল হক, মাওলা ব্রাদার্স, ৩৯ বাংলাবাজার ঢাকা) লেখা হয়েছে যে, ‘১৯৯৪ সালের ১০ এপ্রিল দুই হাজার আটশ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ৪.৮ কিলোমিটার যমুনা বহুমুখী সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বিরোধী দলগুলো।’
উল্লেখ্য, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধাযক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৭২ দিন হরতালে অর্জিত ফল সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিল বিএনপি সরকার; যা পরে সংবিধান থেকে উচ্ছেদও করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
বেগম খালেদা জিয়া কোনো কটূক্তি করেন না : এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি খায়রুল কবির খোকন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার বিরুদ্ধে কাজ করে, উন্নয়নের কথা বললেও গণমুখী উন্নয়নের বিরুদ্ধেও কাজ করে। তারই প্রমাণ যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন হরতাল করা।
খোকন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কিন্তু আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার এমন গণবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোনোরূপ কটূক্তি করেননি। কিন্তু শেখ হাসিনা তা অবলীলায় করলেন এবার। বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মায় ডুবাতে চেয়েছেন তিনি।
যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন হরতাল নিন্দনীয় কাজ ছিল- ড. রিপন : এদিকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ড. আসাদুজ্জামান রিপন সম্প্রতি একটি স্যাটেলাইট টিভিতে আলোচনায় বলেন, ১৯৯৪ সালের ১০ এপ্রিল যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন আওয়ামী লীগের হরতাল পালন একটি নিন্দনীয় কাজ ছিল। অথচ আজ পদ্মা সেতুর নামে চলছে অনেক কিছু। এর ব্যয় সম্পর্কে সুষ্ঠু তদন্ত দরকার।