সড়কে নিহত ৯
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:১০ এএম, ১১ জানুয়ারী,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:২৫ এএম, ২৫ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত শনিবার থেকে আজ রবিবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় নারায়ণগঞ্জে পুলিশ কনস্টেবল, টাঙ্গাইলে ২ মোটরসাইকেল আরোহী, সাতক্ষীরায় ওভারটেক করতে গিয়ে যাত্রীবাহী বাস খাদে ২ জন, মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ১ জন, চুয়াডাঙ্গায় ২ জন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শান্তিগঞ্জে বাস-সিএনজি অটোরিকশা সংঘর্ষে ১ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ : আড়াইহাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় সুমিত কুমার কর হৃদয় (২৪) নামে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-আড়াইহাজার সড়কের ফকির বাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হৃদয় উপজেলার পাঁচগাঁও দেওয়ানপাড়া গ্রামের শেখর রঞ্জন করের ছেলে। নরসিংদী জেলা পুলিশে কর্মরত ছিলেন। আড়াইহাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ কান্তি রায় জানান, একটি অনুষ্ঠান শেষে দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে চার বন্ধু বাড়ি ফিরছিলেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পেছনের মোটরসাইকেলটি সামনের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এ সময় হৃদয় রাস্তার খুঁটির সঙ্গে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় আড়াইহাজার হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরও তিনজন। ৩ বছর আগে হৃদয় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন।
টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারীসহ দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ও একজন আহত হয়েছে। আজ রবিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্তের সংযোগ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। যমুনা সেতু পূর্ব থানার এসআই শরিফুল ইসলাম এখবর নিশ্চিত করেছেন। যমুনা সেতু পূর্ব থানার এসআই শরিফুল ইসলাম জানান, সেতু এলাকা থেকে এলেঙ্গাগামী একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। এসময় একটি গাড়ি তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেলের আরোহী কালিহাতী উপজেলার ভাবলা মধ্যপাড়া গ্রামের জামাল সরকারের ছেলে শরীফ সরকার (২৩) এবং কচুটি গ্রামের আব্দুস সামাদের মেয়ে মোছা. সাবিনা (২৪) নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় মোটরসাইকেলের চালক মো. আশরাফ আলীকে (২৩) উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আশরাফ ভাবলা গ্রামের জয়েন উদ্দিনের ছেলে।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় ওভারটেক করতে গিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে দুজন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১৫ জন। আজ রবিবার সকাল ৯টার দিকে সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের পাটকেলঘাটা থানার শাকদাহ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের মৃত. মাদার মন্ডলের ছেলে রামপদ মন্ডল ও একই এলাকার মৃত বনমালী মন্ডলের অতীঙ্কর মন্ডল। স্থানীয়রা জানান, খুলনা থেকে যাত্রীবাহী একটি বাস শাকদাহ এলাকায় পৌঁছালে আরেকটি যাত্রীবাহী বাসকে ওভারটেক করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে মাছের ঘেড়ে পড়ে যায়। অন্য বাসটি দ্রুত গতিতে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ব্যাপারে যোগাযোগ পাটকলেঘাটা থানার অফিসর ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ জানান, আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মৌলভীবাজার : জেলার জুড়ী উপজেলায় টাটা পিকআপের সাথে মোটরসাইকেলে মুখোমুখি সংঘর্ষে হোসাইন আহমদ (২১) নামের একজন নিহত হয়েছেন। আজ রবিবার ১০ জানুয়ারি বেলা ১২টার দিকে লাঠিটিলা রোডের জুড়ী কলেজের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর স্থানীয়রা জুড়ী ৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত হোসাইন আহমদ উপজেলার হাসনাবাদ এলাকার মৃত চেরাগ আলীর ছেলে। পথচারী খোরশেদ আলম বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি। তার পরে দেখি লোকজনের দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি টাটা মিনি পিকাআপের সাথে মোটরসাইকেল সংঘর্ষ হয়। মোটর সাইকেল আরোহীর মাথায় খোলস বের হয়ে গেছে। সাথে সাথে একটা সিএনজিকে এনে হাসপাতালে পাঠাই। পরে ৯৯৯ কল করে পুলিশকে জানালাম।
চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় পৃথক ৩ সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত হয়েছেন। গত শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে। দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা এলাকায় ট্রাক্টরের সঙ্গে ধাক্কায় সিএনজি আরোহী নজির আহমেদ (৫৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে দর্শনা মা ও শিশু হাসপাতালের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নারী ও শিশুসহ চারজন। নিহত নজির আহমেদ উপজেলার পরাণপুর গ্রামের মৃত মোবারক মন্ডলের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাতে সিএনজিযোগে চুয়াডাঙ্গা থেকে দর্শনার দিকে যাচ্ছিলেন নজির আহমেদ। এ সময় দর্শনার বাসস্টান্ডের অদূরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাক্টরকে ধাক্কা দেয় সিএনজিটি। এতে সিএনজির যাত্রীরা রাস্তায় ছিটকে পড়ে। এর মধ্যে নজির আহমেদ ঘটনাস্থলেই মারা যান। এছাড়া সিএনজি যাত্রী নারী ও শিশুসহ চারজনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয় স্থানীয়রা। এদিকে শনিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত জোহর আলী (৪৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মারা যান তিনি। তিনি সদর উপজেলার জালশুকা গ্রামের মৃত ভাটই শেখের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কাজ শেষ করে আলমসাধুযোগে চুয়াডাঙ্গা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্য (শ্যালোইঞ্জিন চালিত তিন চাকার যান) জোহর আলীসহ আরো ১০ জন। এ সময় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল এলাকায় পৌঁছালে একটি ট্রাক পেছাতে গিয়ে ওই আলমসাধুকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কায় আলমসাধুর মাটিকাটা ১০ শ্রমিকই গুরুতর আহত হয়। তাদের সবাইকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে নিলে জোহর আলীকে রাজশাহী মেডিক্যালে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে হাসপাতালে অবস্থানকালেই রাতে মারা যান।
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শান্তিগঞ্জ এলাকায় একটি বাস ও একটি সিএনজি অটোরিকশা সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম মো: সোহেল মিয়া (৩২)। নিহত সোহেল দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজিটির চালক বলে জানা যায়। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার বাসিন্দা। আজ রবিবার সকালে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে জয়কলস হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সোহেল গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পর দুপুরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জগামী একটি বাস সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের দক্ষিণ সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ বাজারে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে সিলেটগামী একটি সিএনজির সংঘর্ষ হলে সিএনজির ড্রাইভার গুরুতর আহত হন। পরে তাকে তাৎক্ষণিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘাতক বাসটিকে আটক করলেও বাসটির চালক পালিয়ে যান।