আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৯ পিএম, ৮ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০২:২৭ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ। এ দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।
গতকাল সোমবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বাণীতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক নারী দিবস একটি অত্যন্ত তাৎপর্যময় দিন। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল লক্ষ্য সমাজের সব স্তরে নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। তাই বাংলাদেশে এ দিবসটির গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাই নারী সমাজের অগ্রগতি সাধিত হলে জাতির সামগ্রিক বিকাশ সম্ভব হবে।
এ সত্যটি উপলব্ধি করেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকার এ দেশের নারী সমাজের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। নারী সমাজের অশিক্ষার অন্ধকার ঘুঁচিয়ে শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের জন্য বেগম খালেদা জিয়ার সরকার অনেক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় তাদেরকে সম্পৃক্ত করার কারণে তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জেগে ওঠে। একই সঙ্গে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছে।
বর্তমান সময়ে নারীরা জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প-সাহিত্য, গবেষণা তথা সমাজের সব স্তরেই উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। বদলে যাওয়া বিশ্বের কর্মপরিবেশে নারীর সাফল্য অর্জনের দিন হিসেবেও আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশ এখন নৈরাজ্যের অন্ধকারে নিমজ্জিত। নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন নারী অথচ তাঁকে সীমাহীন হয়রানি ও হেনস্তা করার জন্য মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে গৃহবন্দি করা হয়েছে। তাঁর ন্যায্য জামিন পাওয়ার অধিকার কেড়ে নিতে সরকার নানা কারসাজি করছে। নারী দিবসে এই সমস্ত রাষ্ট্রীয় অনাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের প্রত্যয় ঘোষণা করতে হবে।
বাণীতে আরো বলা হয়, শান্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার এবং টেকসই উন্নয়নে বৈশি^ক অগ্রগতির ক্ষেত্রে অপরিহার্য শর্ত হলো নারীর অধিকার। নারী সমাজ যাতে অবহেলা, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার এবং ন্যায্য অধিকার থেকে তারা যাতে বঞ্চিত না হয় সেদিকে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বৈশ্বিক কর্মযজ্ঞে নারীর সমতায়ন এখন সর্বপ্রথম এজেন্ডা হওয়া উচিত। আজকের এই শুভ দিনে আমি নারী সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানাই। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘ভেঙ্গে ফেলো বৈষম্য’ এর সফলতা কামনা করছি।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখে পালিত হয়। সারাবিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে। আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীর সুখী সমৃদ্ধশালী ও সম্মানজনক জীবন কামনা করে তাদেরকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
সারাবিশ্বে নারীদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। তথাপিও অর্ধেকেরও বেশি নারী অধ্যুষিত বাংলাদেশের নারীরা সবসময়ই থেকেছে অবহেলিত। বাংলাদেশে ক্ষমতার প্রশ্নে লিঙ্গ সমস্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ‘বিশ্বব্যাপী যা কিছু সৃষ্টি চিরকল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই ঐতিহাসিক নারী কবিতার লাইনটির যথার্থতা অনুধাবন করে আমাদের দেশের নারীদের কল্যাণে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রশংসনীয় উদ্যোগে নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে নারীর শিক্ষা অবৈতনিক ও অর্থনৈতিকভাবে তাদের স্বাবলম্বী করতে এক ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে নারীরা দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারতেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। তবে বর্তমান শাসনকালে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি।
বর্তমান দুঃসময়ে নারী ও শিশুরা অতি মাত্রায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার শিকার হয়ে গৃহবন্দি। নারী হলেও তাঁর ওপর চালানো হচ্ছে বন্য বিচারের জুলুম। এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল থীম ‘ভেঙ্গে ফেলো বৈষম্য’-এর সফলতা কামনা করছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এই শুভক্ষণে আমি নারী সমাজের প্রতি গুরুত্বারোপসহ তাদের সার্বিক উন্নয়নে সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য উদাত্ত আহবান জানাই।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের বাণী : আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ বলেছেন, প্রতি বছর ৮ মার্চ নারীদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে বিশ^ব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে আমরা বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। তাদের সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। আন্তর্জাতিক নারী দিবস বিশ্বব্যাপী নারীর শিক্ষা, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠাটি বেশি গুরুত্ব পায়। নারী দিবসের দিনে গোটা বিশ^ নারীর স্বাবলম্বী হওয়ার প্রশংসা করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালবাসা প্রকাশ করে। নারীর সমান অধিকার মূলত সকলের অগ্রগতির নিশ্চয়তা। আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। নারীদের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করে একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নতি। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নারীদের সামগ্রিক উন্নয়নে যুগান্তকারী অবদান রেখেছেন। সেই থেকে বাংলাদেশের নারীরা নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সাফল্য অর্জন করছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের ওপর অত্যাচার ও জুলুমের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ ধরনের অমানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আমরা আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নারীদের ওপর সকল অনাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের দৃঢ় সংকল্প ঘোষণা করছি। আমরা চাই-নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত পৃথিবী। আজকের এই শুভ দিনে আমরা নারী সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণে নিষ্ঠা সহকারে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাই। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘ভেঙ্গে ফেলো বৈষম্য’-এর সফলতা কামনা করছি।