করোনা সংকট মোকাবিলা
ত্রাণ বিতরণে অনৈতিক প্রভাব ক্ষমতাসীনদের : টিআইবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১২ এএম, ১৫ জানুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৪৮ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ত্রাণ বিতরণে ক্ষমতাসীনদের অনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গত বৃহস্পতিবার টিআইবির এক গবেষণাপত্রে বলা হয়, উপযুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের প্রভাবে বেসরকারি সংস্থাগুলো অনেককে সহায়তা দিতে বাধ্য হয়েছে। প্রায় ১৮ শতাংশ সংস্থা কার্যক্রমে প্রভাবের শিকার হয়েছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে ২৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অসহযোগিতা করেছে। তবে বহুমুখী প্রতিকূলতা ও আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা প্রশংসনীয়।
‘করোনা সংকট মোকাবিলায় সাড়াদানকারী বেসরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন টিআইবির রিসার্চ অ্যাসোসিয়েটস-কোয়ান্টিটেটিভ আব্দুল হান্নান সাখিদার। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর গবেষণা করা হয়।
গবেষণাপত্রে বলা হয়, অংশগ্রহণকারী ৫৩ শতাংশ সংস্থা উপকারভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের প্রভাবে উপকারভোগীকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হয়েছে। ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ সংস্থা তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা এবং স্থানীয় ক্ষমতাশালীদের প্রভাবের শিকার হয়েছে। সহায়তাপ্রার্থীদের হার বেশি থাকার কারণে তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রেও সংস্থাগুলোকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৪১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বহুমুখী প্রতিকূলতা ও আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি সংস্থাগুলো ভূমিকা পালন করেছে। সংকটাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করতে সক্ষম হয়েছে। আরও হয়তো ভালো হতে পারত। তবে যতটুকু করেছে, সেটা প্রশংসনীয়।
তিনি বলেন, তাদের আর্থিক মূল উৎস ছিল নিজেদের সংগ্রহ করা অর্থ। সহায়তা প্রদানে স্বজনপ্রীতির প্রমাণ পাওয়া গেলেও কোনো অবৈধ আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মোটা দাগে মনে করি করোনা মোকাবিলায় বেসরকারি সংস্থাগুলো যথাযথ ভূমিকা রাখতে পেরেছে।
ক্ষুদ্র্রঋণ কার্যক্রমে অনিয়ম প্রসঙ্গে গবেষণাপত্রে বলা হয়, করোনাকালে বিভিন্ন মেয়াদে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখা ও সুবিধাজনক সময়ে ঋণ বা কিস্তি পরিশোধের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলোর একাংশের বিরুদ্ধে ঋণের কিস্তি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী উপকারভোগীর ৭১ শতাংশ কোনো না কোনো এনজিওর ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের নিয়মিত উপকারভোগী। এদের প্রায় ২৬ শতাংশ করোনাকালে ঋণের কিস্তি পরিশোধে সমস্যার সম্মুখীন হন।