পরিযায়ী পাখির গ্রাম
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৮:৫০ পিএম, ৭ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২০ | আপডেট: ০৬:৪০ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
পাখি-সব করে রব, রাত্রি পোহাইল। কাননে কুসুমকলি, সকলি ফুটিল।। রাখাল গরুর পাল, ল’য়ে যায় মাঠে। শিশুগণ দেয় মন নিজ নিজ পাঠে। (মদনমোহন তর্কালঙ্কার)। তেমনি আবেশ তৈরী করে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া গ্রামের গাছে বাসা বেঁধেছে বিরল প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। এটা যেন বিনোদনের খোরাক হয়ে পড়েছে বিনোদন পিপাসু মানুষের। গ্রামবাসীও গভীর যত্নে ও পরম মমতায় আগলে রেখেছেন পাখিগুলোকে।
সুদুর সাইবেরিয়া থেকে আগত এসব পাখির মধ্যে রয়েছে শামুকখোল, রাতচোরা, পানকৌড়ি, শামুক ভাঙ্গা, হাইতোলা, বাদুর ও হারগিলা। এসব পাখি দেখতে আসা মানুষরা যেমন খুশি তার চেয়ে বেশি খুশি গ্রামবাসী। গ্রামে খাল-বিল আর ফসলের মাঠ থেকে খাবার খোঁজে খায় পাখিগুলো। নিরাপদ আশ্রয়ে প্রজননও করছে তারা। এতে দিন দিন বাড়ছে পাখির সংখ্যাও। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই গ্রামটি গুরুত্বপূর্ণ পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিণত হবে বলে জানান গ্রামবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে ২০০টি উঁচু গাছে এবং বাঁশঝাড়ে প্রায় ২০/২৫ হাজারো অতিথি পাখি বাসা বেঁধেছে। সেখানেই তারা বাঁচ্চা দিচ্ছে। পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত সারা গ্রাম। পাখির সেই কোলাহল দেখতে ভোর থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ওই গ্রামে ভিড় করে থাকেন হাজার হাজার বিনোদন পিপাসু মানুষ।
বিভিন্ন এলাকা থেকে দেখতে আসা অনেক দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এমন প্রাকৃতিক পরিবেশ পাওয়া খুব কঠিন। এমন পরিবেশের কথা শুনতে পেরে আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রায় দিনই এখানে আসি।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান শাহিন জানান, ‘এখানে কোনো পাখিকে যেন কেউ বিরক্ত না করে সেদিকে আমি খেয়াল রাখি এবং গ্রামের সবাইকে সজাগ থাকতে বলেছি। পাখি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রত্যেক বছর এ সময় এখানে হাজার হাজার জনতা ভিড় জমান। এ সময় মানুষ অনেকটাই বিনোদন উপভোগ করেন। এখানে কেউ পাখি শিকার করতে না পারে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখি’।উপজেলা ভেটেনারী সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরিযায়ী পাখি গুলো প্রতি বছরই আমাদের উপজেলায় আসে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে পাখিগুলোকে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। তারা যেন নিরাপদে বসবাস করতে পারে এবং কোন পাখি অসুস্থ্য হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম হাবিবুল হাসান বলেন, ‘এ ব্যপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাখিদের নিরাপত্তা জোরদার করেছি এবং পাখি সংরক্ষন আইনের বিষয়ে গ্রাম বাসীদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। সেখানে রাস্তা সংস্কারের বিষয়েও আলোচনা চলছে’।