শায়েস্তাগঞ্জে সুইট লেডি পেঁপে চাষে নজর কেড়েছেন মিল্লাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৩ পিএম, ২৬ জুন,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:১০ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে প্রথম চাষি হিসেবে সুইট লেডি পেঁপে চাষ করে নজর কেড়েছেন মিল্লাদ। নতুন এই ফসলের সাথে অনেকেরই পরিচয় না থাকার কারণে আর সুন্দর নামের সমন্বয় থাকার কারণে উপজেলার কৃষকদের সহজেই সুইট লেডি পেঁপের প্রতি আলাদা দৃষ্টি পড়েছে।
সুইট লেডি পেঁপের চোখ ধাঁধানো ফলনে যেন রাজ্যের হাসি ফুটে উঠেছে শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার বিরামচর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক তালুকদারের ছেলে আব্দুল গাফফার তালুকদার মিল্লাদের। প্রয়োজনের তাগিদে আর শখের বসেই ব্যবসার পাশাপাশি তিনি কৃষি কাজ করছেন।
উপজেলার প্রথমে চাষি আব্দুল গাফ্ফার তালুকদার মিল্লাদ সুইট লেডি জাতের পেঁপের চারা রংপুর থেকে সংগ্রহ করেন। পৈত্রিক ৩৬ শতক জমিতে ৩শ পেঁপের চারা রোপণ করেন। চারা রোপণের প্রায় তিন মাসের মধ্যেই প্রতিটি গাছে গড়ে ২৫ থেকে ৩০টি করে পেঁপে ধরেছে, একেকটা পেঁপে ৫শ গ্রাম থেকে ৬শ গ্রাম ওজনের হয়েছে। নতুন নামের এই সুইট লেডি জাতের পেঁপে চাষ করে এলাকায় সবার দৃষ্টি কেড়েছেন মিল্লাদ।
এদিকে মিল্লাদের চাষাবাদে সফলতা দেখে এলাকার অনেক চাষি পেঁপে চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। তারাও জমি প্রস্তুত করছেন, রোপণ করবেন এ জাতের পেঁপে।
এ ব্যাপারে আব্দুল গাফফার তালুকদার মিল্লাদ বলেন, তার পেঁপে বাগান করার জন্য বহু দিনের শখ ছিল। কিন্তু ব্যবসার কারণে এতদিন বাগান করতে পারেনি। ব্যবসায় লোকসান হওয়ার পরে তার বড় ভাই মাহমুদ কাদির তালুকদার বাচ্চু, মাসুদ তালুকদার ও আব্দুল জব্বার তালুকদার মুরাদের সহযোগিতায় পেঁপে চাষ শুরু করেন। আর প্রথমবারেই সফলতা পেয়ে যান।
তিনি বলেন, যে কেউ পেঁপের চাষ করে বেকারত্ব দুর করার পাশাপাশি স্বাবলম্বী ও হতে পারবে। জমি তৈরি, চারা, সার, বালাইনাশক, রোপণ, আগাছা পরিষ্কার ও শ্রমিকের টাকা সহ প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখনই গাছ থেকে সপ্তাহে ২/৩ বার পেঁপে সংগ্রহ করা যাচ্ছে। কাঁচা পেঁপে পাইকারি মূল্যে কেজি ৩৫ টাকা করে বিক্রি করছেন। এক বছরে প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাগান করার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার টাকার কাঁচা পেঁপে বিক্রি হয়েছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে দেড় বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া গেলে প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
পেঁপে বাগান দেখতে আসা সৈয়দ আরিফ আহমেদ বলেন, পরিশ্রম ও লক্ষ অটুট থাকলে কৃষি কাজে সফল হওয়া সম্ভব। প্রথমবারের মতো পেঁপে বাগান করে তিনি বাজিমাত করেছেন। তার বাগান দেখে এলাকার অনেকেই এখন উৎসাহ পাচ্ছেন পেঁপে চাষ করার।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, সুইট লেডি পেঁপে জাত টি নতুন। এতে যেমন পোকার আক্রমণ হয়না তেমনি ফলন ও হয় বেশি। তাই বেকার যুবকরা এই পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবে সহজেই। মিল্লাদ তালুকদার তার প্রমাণ। উনার সফলতা দেখে অনেকেই এখন আমাদের পরামর্শ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত ধর বলেন, সুইট লেডি পেঁপের এ জাতটি খুব ভালো। প্রচুর ফল আসে ও পোকা মাকড় আক্রমণ করতে পারেনা, যার ফলে বাম্পার ফলন হয়। এ জাতের পেঁপে চাষ করে সহজেই লাখপতি হওয়া যাবে। রোপণের অল্পদিনের মধ্যেই গাছে ফলন আসে। উপজেলার মধ্যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মিল্লাদ তালুকদার প্রথমবারেই সফলতা পেয়েছেন। কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতা ও পরামর্শে যে কেউ পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারে।