জনপ্রিয় অভিনেতা দিলু আর নেই
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১৯ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১২:১০ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা মুজিবুর রহমান দিলু আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ছেলে অয়ন রহমান।
মৃত্যুকালে অভিনেতা দিলুর বয়স হয়েছিল বছর ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা একটায় অভিনেতা দিলুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে বেলা তিনটায় তাঁকে নেওয়া হবে শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে। সেখানে শ্রদ্ধা জানানো শেষে নেওয়া হবে বনানী কবরস্থানে। সেখানে গার্ড অব অনার জানিয়ে দাফন করা হবে।
হঠাৎ গত বুধবার সকালে মুজিবুর রহমান দিলুর অসুস্থতার খবর পাওয়া যায়। দিলুর ছেলে অয়ন জানান, তাঁর বাবার ফুসফুসে সমস্যা ধরা পড়ে। ভর্তির পরই চিকিৎসক জানিয়েছেন, বাবার বাঁ পাশের ফুসফুস ৭০ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে। আর ডান পাশেরটা ১০ শতাংশ। উন্নত চিকিৎসাসেবা পাওয়ার প্রত্যাশায় উত্তরার হাসপাতাল বদল করে গুলশানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে গুলশানের হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে আজ সকালে বিদায় নিয়েছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
‘সংশপ্তক’ নাটকের মালু চরিত্রের কথা নিশ্চয় সবার মনে আছে। অভিমানে লম্বা সময় ধরে অভিনয় থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন মালুখ্যাত মুজিবুর রহমান দিলু। তাঁর জন্ম ১৯৫২ সালের ৬ নভেম্বর।
টিভি নাটকের আগে থেকেই এই অভিনেতা মঞ্চে অভিনয় করছেন। মঞ্চ থেকে তাঁর অভিনয় শুরু। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তালিকাভুক্ত শিল্পী হন। ১৯৭৬ সাল থেকে টেলিভিশনে নিয়মিত অভিনয় করছেন। তবে মাঝে দীর্ঘদিন অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন। স্ত্রী রানী রহমান, দুই ছেলে অয়ন রহমান, অতুল রহমান ও এক মেয়ে তানজিলা মুজিবকে নিয়ে ঢাকার উত্তরায় বসবাস করতেন মুজিবুর রহমান দিলু। শান্ত মরিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাহী পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন
তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মজিবুর রহমান দিলুর উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক হচ্ছে ‘আমি গাধা বলছি’, ‘নানা রঙ্গের দিনগুলি’, ‘জনতার রঙ্গশালা’, ‘নীল পানিয়া’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘ওমা কী তামাশা’ প্রভৃতি।
এ ছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় নাটক ‘তথাপি’, ‘সময়–অসময়’ ও ‘সংশপ্তক’-এ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। আশির দশকে ছোটদের জনপ্রিয় গল্প ও সংগীত এর সমন্বয়ে শ্রুতি নাটক টোনাটুনি প্রকল্পের নির্দেশক ছিলেন দিলু। তার কণ্ঠে পাতা ওল্টাও, শিশুদের মধ্যে অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলো।
২০০৫ সালে গুলেন বারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন কোমায় ছিলেন দিলু। পরে তিনি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করেন।