কিছু পেতে নয়, ‘জনকল্যাণে’ রাজনীতি করুন-শেখ হাসিনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৩ এএম, ২০ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২০ | আপডেট: ০৩:৩৪ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কিছু প্রাপ্তির জন্য রাজনীতি না করে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য জনগণের কল্যাণে এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করা। কিছু পাওয়া নয়; মানুষের জন্য কিছু করতে পারাই আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটি সংগঠন যাদের আগামীর চিন্তা, একটি লক্ষ্য ও দেশ নিয়ে পরিকল্পনা আছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্স যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এবার নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকে দলীয় সভাপতি হিসেবে দ্বিতীয়বার যোগদান করেন তিনি।
দলীয় নেতাকর্মীদের প্রাপ্তির জন্য রাজনীতি না করে জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা দেখিয়ে দিলো টাকা পয়সা কোনো কিছুর মূল্য নেই। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেখানে করোনা সামলাতে হিমশিম খেয়েছে, সেখানে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম একদিনের জন্যও থামতে দেয়নি। অনেক উন্নত দেশের প্রবৃদ্ধি যেখানে মাইনাস গ্রেডে সেখানে আমরা প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য হয়তো ধরে রাখতে পারিনি। কিন্তু পাঁচের ওপরে আমাদের প্রবৃদ্ধি থাকবে বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির এ সময়ে দুর্নীতি-অনিয়ম করে আয় করা টাকা জীবন বাঁচাতে কাজে আসেনি। একটা সময় দেখা যেতো একটু কিছু হলেই চিকিৎসার জন্য বিদেশ চলে যেতো। কিন্তু করোনা বুঝিয়ে দিয়ে গেলো টাকা-পয়সার কোনও মূল্য নেই। আর মনে হয় করোনা ভাইরাস এসেছে মানুষকে ‘শিক্ষা’ দিতে। এ সময় করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশি করে খাদ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
করোনায় অর্থনীতির গতি ধরে রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, করোনা ভাইরাস এসে সারা দুনিয়া স্থবির করে দিয়েছে, আমাদের দল আমাদের সরকার কিন্তু থেমে থাকেনি। জনগণের জন্য কাজ করে চলছি। অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রণোদনা দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমার করোনা মহামারিতে মৃত্যুর হার কম রাখতে সক্ষম হয়েছি। কারণ ঘাবড়ে না গিয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। করোনা সংক্রমণ শুরুর পরই দুই হাজার ডাক্তার নিয়োগ করেছি, নার্স নিয়োগ দিয়েছি।
এ সময় করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে সকলকে সতর্ক হবার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার আবার একটা ধাক্কা আসছে। সচেতন হলে কিন্তু সুস্থ থাকা যায়। মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে; এখন এর বিকল্প নেই। ভ্যাকসিন আসছে তা নিয়ে নানা গবেষণা চলছে। আমরা আগাম টাকা দিয়ে রাখছি। যখনই বাজারে আসবে আমরাও পাবো। এখন মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।
সরকারের নানামুখী সমালোচনার জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, আমার জানতে ইচ্ছে হয়, যারা বলেন দেশে গণতন্ত্র নেই; তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- জিয়া যখন হত্যা-ক্যু করে ক্ষমতা দখল করেছিলো, ’৯৬ সালে দ্বিতীয়বার যখন খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এলো; ২০০১- এ বিএনপি-জামায়াত জোট মেয়েদের ওপর যখন অমানবিক নির্যাতন করলো তখন কী গণতন্ত্র ছিলো?
এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখন তারা কী করে- ভোটে প্রার্থী দেয়, পরে ভোটের মাঝামাঝি সরে দাঁড়ায়। এটা তাদের ‘প্ল্যান বি’। তাদের উদ্দেশ্য নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। তারা নির্বাচনের দিন বাসে আগুন দিয়ে আবার সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারের সমালোচনা করে! বিএনপির মিথ্যাচার থেকে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতো মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করেনি। তারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করেছে। হত্যা-খুন-ক্যু এসব করে মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। আর আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেছে।