হিমাগারে মজুদ রেখে দেখানো হচ্ছে বাজারে আলুর স্বাভাবিক সরবরাহ নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৯ এএম, ২২ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ০২:১৯ পিএম, ২২ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২৪
হিমাগারে মজুদ রেখে আড়ত ফাঁকা করে রাখা হয়েছে। দেখানো হচ্ছে বাজারে আলুর স্বাভাবিক সরবরাহ নেই। সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় সংকট দেখিয়ে বাড়ানো হয়েছে আলুর দাম। ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার থেকে দুই দফা আলুর দর নির্ধারণ করে দেওয়ার পরেও দেশের কোথাও নির্ধারিত সেই দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না। দেশের কোথাও ২৬ টাকা কেজি দরের আলুর সরবরাহ নেই, এমন অজুহাত তুলে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। রাজধানীর একাধিক বাজারে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বুধবার ২১ অক্টোবর থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি শুরু করেছে। তবে তা বাজারে কোনও প্রভাবই ফেলেনি। এর ফলে আলুর বাজারে বিদ্যমান অস্থিরতা নিরসনের কোনও লক্ষণও দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৭ অক্টোবর প্রতিকেজি আলুর দাম কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে ২৩ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ২৫ টাকা এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৩০ টাকা বেঁধে দিয়েছিল কৃষি বিপণন অধিদফতর। এই দাম নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়। কিন্তু নির্ধারিত এই দামের বিষয়ে আপত্তি জানান ব্যবসায়ীরা। একপর্যায়ে তারা আলু বিক্রি বন্ধ করে দেন। মঙ্গলবারের ২০ অক্টোবর সভায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আলুর দাম কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি ২৭ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ৩০ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৩৫ টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বড় ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় হাজার হাজার টন আলু তারা কোল্ডস্টোরেজে মজুদ করে রেখেছেন। ক্রমশ আলুকেন্দ্রিক সংকট ঘনীভূত করে সরবরাহে অবস্থাপনার অজুহাত এনে অধিক দামে ধীরে ধীরে এসব আলু কোল্ডস্টোরেজ থেকে বের করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। ১০০ টন চাহিদার বিপরীতে বাজারে আসছে ১০ টন আলু। ফলে ৯০ টনের সংকট সৃষ্টি করে বাজারকে অস্থির রাখার পায়তারা করছে আলুর অসাধু ব্যবসায়ীরা। এমন অভিযোগ করেছেন আলুর পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
দেশের আলুর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার হচ্ছে রাজধানীর কাওরানবাজার। সেখানে দীর্ঘদিনের আলুর পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কোথাও আলুর মজুদ নাই। সবখানে ফাঁকা। এখানে যে প্রতিদিন হাজার হাজার টন আলু কেনাবেচা হয়েছে তা বোঝারও কোনও কায়দা নাই। সেখানে বিরাজ করছে পুরোমাত্রায় অলসতা।
জানতে চাইলে সেখানকার পাইকারি ব্যবসায়ী আবদুর রহমান জানিয়েছেন, ‘বাজারে আলুর সরবরাহ নাই। তাই আমরা অলস বসে আছি। কেনাবেচা নাই। আলু আছে কোল্ডস্টোরেজে। কিন্তু আড়ৎদাররা তো কোল্ডস্টোরেজ থেকে আলু ছাড়ছে না। বাজার চলবে কী দিয়ে? তাই অলস বসে আছি।’
এদিকে রাজধানীর অদূরে মুন্সিগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানকার কোল্ডস্টোরেজগুলো এখন আলুতে পরিপূর্ণ। বছরের এই সময় ক্রমশ আলু কোল্ডস্টোরেজগুলো থেকে আলু বের করে বাজারে ছাড়া হলেও এ বছরের চিত্র ভিন্ন। এ বছর এখনও ফাঁকা কোল্ডস্টোরেজগুলোয় নতুন করে আলু রাখা হচ্ছে।