মূল্যস্ফীতি না কমার মূল কারণ আ'লীগ সরকারের ভুল নীতি : অর্থ উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:১১ পিএম, ১৬ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৮:৪৩ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পরও মূল্যস্ফীতি না কমার পেছনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ভুল নীতিকে দায়ী করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
আজ শনিবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘ফাইনান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্মস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সংলাপে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।
তিনি বলেছেন, সবাই বলছে এত কিছু করার পরও মূল্যস্ফীতি কেন কমছে না। এর প্রধান কারণ আগের সরকারের ভুল নীতি। এতদিন বিবিএসসহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব তথ্য দিয়ে এসেছে, সেগুলোতে প্রশ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, আমি অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছি তথ্য প্রবাহ সঠিক রাখতে। সঠিক তথ্য না আসলে অন্যান্য তথ্যগুলো ভুল আসবে। নীতিমালা প্রণয়ন ঠিক হবে না। এতদিন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছিল না বলে এই সমস্যা হয়েছে। একের পর এক দুর্নীতি ও অন্যায় হয়েছে, যার মাশুল দিচ্ছে দেশের জনগণ।
এরপর সদ্য সাবেক গভর্নরকে উদ্দেশ করে ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, উইথ ডিউ রেসপেক্ট আমি বলতে চাই, সাবেক গভর্নর ৪২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থেকে বিক্রি করতে করতে ৩০ বিলিয়নে নিয়ে আসলেন। কারণ ছিল বৈদেশিক মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল করা। কিন্তু কোনো কাজই হয়নি। ১২ বিলিয়ন ডলার নিঃশেষ করে তিনি এখন ঘুমিয়ে আছেন। কিন্তু কোথায় আছেন জানি না। আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পলিসিগত লিগ্যাসি বা নীতিগত দীর্ঘসূত্রতা পেয়েছি। যার কারণে কোনো কিছু পরিবর্তন করতে চাইলেই দ্রুত করা যায় না।
ফিজিবিলিটি টেস্ট না করেই অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, একটি প্রজেক্ট থেকে কত টাকা আয় হবে, কত টাকা ব্যয় হবে, কত দিন সময় লাগবে এবং এসব প্রজেক্টে বিপরীতে নেওয়া ঋণের সুদের হার কি হবে, এসব বিষয়ে কোনো গবেষণা করা হয়নি। উচ্চ সুদে ঋণ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পরেই একটি সংস্থা আমাদের উচ্চ সুদে ঋণ দিতে চেয়েছিল। আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ উচ্চ সুদের ঋণ নিলে আমরা পরিশোধ করতে পারবো না।
দ্রুতই অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন সম্ভব নয় উল্লেখ করে ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৫ বছরে অর্থনীতিতে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তার স্বল্পমেয়াদি সংস্কার কাজ চলছে। এরই মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রায় কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। তবে, সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুত পুরো অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, সময় সাপেক্ষ হলেও দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামীর জন্য এমন পলিসি করা হচ্ছে, যাতে কেউ আর টাকা পাচার করতে পারবে না।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, এখন থেকে সবকিছু সঠিক পথে পরিচালনার জন্য একটি নতুন রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। পরবর্তীতে যারা আসবে তাদের এই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হবে। তাহলেই শান্তি ফিরে আসবে। আর যদি পুনরায় দুর্নীতি শুরু হয় তাহলে জনগণ আবারও ফুঁসে উঠতে পারে।