হাসিনার খোঁজ পাচ্ছে না সরকার : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৩৭ পিএম, ৮ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০৬:২২ এএম, ২৮ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানের বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা ভারতে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে খোঁজ করেছি। কোথাও তার সন্ধান পাইনি। তার অবস্থান সম্পর্কে কেউ কনফার্মেশন দিতে পারেনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পূর্ব নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন তিনি। দেড় ঘণ্টার নোটিশে মন্ত্রণালয় জরুরি ওই সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।
ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা বর্তমানে আরব আমিরাতে আত্মগোপনে রয়েছেন মর্মে খবর বেরিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা অনেক জায়গায় খোঁজ করেছি। কোনো কনফার্মেশন পাইনি। মিডিয়ায় আপনারা যেমন দেখেছেন, আমরাও দেখেছি যে, আমিরাতের আজমানে গেছেন।
ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ট্রাভেল পাস নিয়ে অন্য দেশে পালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ফিরিয়ে আনা হবে কি-না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে বাংলাদেশে ফেরার জন্য ট্রাভেল পাস ইস্যু করা হয়ে থাকে। এটা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার জন্য নয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ভারত শেখ হাসিনাকে অন্য দেশে পাঠলো কি-না? এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, সেটা যুক্তরাষ্ট্রকেই জিজ্ঞেস করেন।
লেবানন থেকে ফিরতে আগ্রহীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে
এদিকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, লেবানন থেকে ফিরতে আগ্রহী প্রবাসী বাংলাদেশিদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তারা যেন ওয়ার জোন থেকে আর একটু উত্তরে সরে যান। আমরা আইওএমকে বলেছি, একটা ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে। তারা সেটা করবে। তবে সমস্যা হলো বৈরুত এয়ারপোর্ট থেকে ফ্লাই করা রিস্কি। সে কারণে বিকল্প পথে ফ্লাই করা যায় কি না, সে চেষ্টাও করছি।
উল্লেখ্য, লেবাননে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আতঙ্কে রয়েছেন। কেউ কেউ আশ্রয় কেন্দ্র কিংবা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইতালির ভিসাপ্রার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভিসা দেওয়া বা না দেওয়া একটি দেশের সার্বভৌম অধিকার। কিন্তু তারা অনেকদিন ধরে আটকে আছে সেটার মধ্যে ২০ হাজার কেইস ক্লিয়ার হয়েছে রোম থেকে। এই ভিসাগুলো দেওয়ার অগ্রগতি খুব কম। ছোটখাটো কিছু অনিয়মের বিষয়ে যেগুলো আছে সেগুলো আমরা শুনেছি। আমি তাদেরকে বলেছি, ইতালির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, দুই-তিনজন আসছেন তাহলে তাদের গতি বাড়বে। যে কেইসগুলো ক্লিয়ার হয়েছে সেগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই সবগুলো ভিসা দিয়ে দেবে। গতি খুবই কম, সেটা যাতে বাড়ে এবং ২০ হাজার ভিসা যেন এ বছরের শেষ নাগাদ ইস্যু হয়। বাকিগুলো আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, দেখা যাক কতোটুকু করা যায়।
তিনি বলেন, আমি ভিসাপ্রার্থীদের বলেছি আপনারা যদি মিছিল-মিটিং বা ঘেরাও করেন তাতে আপনাদের কোনো লাভ হবে না, দেশেরও কোনো লাভ হবে না। কারণ তারা যদি ভয় পায় তাহলে অনেকে হয়তো চলে যাবে, তাতে দেখা যাবে ভিসা হবেই না। তারাও একমত হয়েছে এমনটা করে ভালো কিছু হবে না। কিন্তু ফিজিক্যালি ঘেরাও করা হলে দেখা যাবে তারা যেসব প্রোগ্রামের অধীনে লিগ্যালি আমাদের ভিসা ইস্যু করে আমাদের লোকজন নিচ্ছে তাহলে কিন্তু আমাদের দেশকে বাদ দিয়ে দিতে পারে। এই আশঙ্কার কথা তাদের আমি জানিয়েছি।
দিনকাল/এসএস