কাজে আসছে না দেড় লাখ ট্রেড লাইসেন্স বই, ডিএনসিসির ক্ষতি ৩০ লাখ টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৮ পিএম, ৬ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৪৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ট্রেড লাইসেন্স সেবা সম্পূর্ণভাবে অনলাইনে স্থানান্তর করা হয়েছে। আর এতে অকেজো হয়ে পড়েছে অগ্রিম কেনা প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার ট্রেড লাইসেন্স বই। এর সঙ্গে কাজে আসবে না প্রায় ১৫০০ বিজ্ঞাপন কর চালান রশিদও। সবমিলিয়ে ডিএনসিসির আর্থিক ক্ষতি হবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
অভিযোগ আছে, উত্তর সিটি করপোরেশনের ২০১৭ সালে রাজস্ব বিভাগের কর ও ট্রেড লাইসেন্স কার্যক্রমের ডিজিটালাইজেশন কাজ শুরু হয়। তারপরও কিছু অসৎ কর্মকর্তার পারস্পরিক যোগসাজশে বিপুল সংখ্যাক ট্রেড লাইসেন্স বই ক্রয় করা হয়। এমনকি ক্রয় পরিকল্পনার আইসিটি বিভাগের সাথে সমন্বয় করেও করা হয়নি। উত্তর সিটির ভান্ডার ক্রয় বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পাঁচ বছর মেয়াদ ১ লাখ ২৮ হাজার বই কেনা হয়। যার প্রতিটির দাম ছিল ২৭ টাকা ২০ পয়সা। আর এরপরে ২০১৯ সালের ২১ মে ৩ লাখ ৭০ হাজার ট্রেড লাইসেন্স বই এবিএম বেলাল হোসেনের রুপা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং সরবরাহ করে; যেগুলোর প্রতিটির দাম ছিল ১৭ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়াও পাঁচটি আঞ্চলিক কার্যালয়েও প্রায় ২০ হাজারের বেশি ট্রেড লাইসেন্স বই মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষ প্রতিটি বই ২০০ টাকা দরে নগরের ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করে থাকে। এছাড়া, উত্তর সিটিতে বর্তমানে ১ হাজার ৪৩৫টি বিজ্ঞাপন কর চালান রশিদ জমা আছে। যার প্রতিটির মূল্য ১১ টাকা, সবমিলিয়ে এগুলোর দাম ১৫ হাজার ৭৮৫ টাকা। এছাড়া ১০ হাজার ৭৫টি বিবিধ রশিদ বহিও জমা আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত জুন থেকে ট্রেড লাইসেন্স সেবা অনলাইনে প্রদান শুরু হয়েছে। এখন এসব বই কাজে লাগবে না। আর এসব বই রাজস্ব বিভাগের সমন্বয় করে কেনা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান ভান্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, এগুলো নিলামে বিক্রি হবে, না অন্য কিছু করা হবে, এটা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। প্রয়োজন না থাকলেও কেন কেনা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি ক্রয় ফাইলের শুরু হয় চাহিদা থেকে। চাহিদা ও কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে একটি দ্রব্য বেশি করা সম্ভব নয়। যারা এটা বলছেন, তারা সঠিক কথা বলছেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, ‘সেবার ক্ষেত্রে এটার একটা প্যারাডাইম শিফট হয়েছে, সেক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা হতে পারে। তবে আরও বিচক্ষণতার সঙ্গে ক্রয় করা উচিৎ ছিল। এসব বই ক্রয়ে কারও গাফিলতি ও যোগসাজশ থাকলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।