সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : আবদুল্লাহ আল-মামুন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৫ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৫৯ এএম, ১ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগে র্যাবের বিদায়ী মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, মাঝেমধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। তবে কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে, দায়ী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এসব কথা বলেন। তিনি আগামী শুক্রবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। মতবিনিময়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বিরোধী দল বলছে, বিগত দিনে পুলিশ সরকারের হয়ে কাজ করেছে। পুলিশপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টিকে কীভাবে মোকাবিলা করবেন? জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, মাঝেমধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। কেউ এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে, সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনের কাঠামোর আলোকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার দায়িত্ব পালন করে। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, র্যাবের সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আছে। এ কারণে আগামী পথচলায় তাঁর ওপর চাপ থাকবে কি না? জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, গত আড়াই বছরে তিনি র্যাবে স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করেছেন। র্যাব আইনানুগপ্রক্রিয়া অবলম্বন করে কাজ করে। কাজ করতে গিয়ে র্যাব বাধা হয়ে দাঁড়ালে অপরাধীরা সর্বশক্তি প্রয়োগ করে। অপরাধীরা র্যাবকে প্রতিহত করে অপরাধমূলক কর্মকা- ঘটায়। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। সে ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। ম্যাজিস্ট্রেট আসেন। কেউ নিহত হলে অভিজ্ঞ ময়নাতদন্তকারী লাশের ময়নাতদন্ত করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনা তদন্ত করেন। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনেন। রায় দেন। গণমাধ্যম সবকিছু মনিটর করে। এসব প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পাদিত হয়।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, অপরাধীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় র্যাবের সদস্যরাও আহত হন। তাঁদের অঙ্গহানি হয়, প্রাণহানিও ঘটে। চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে র্যাবকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কোনো র্যাব সদস্য সক্ষমতা হারিয়ে ফেললে তাঁর চাকরি চলে যায়। আগামী দিনেও র্যাব সাহসিকতা ও দেশপ্রেম নিয়ে তার দায়িত্ব পালন করে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। র্যাবের সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। নিষেধাজ্ঞার পর বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ার কমে গেছে। এটা নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব কি না—এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, যেখানে প্রয়োজন হয়, বাহিনী আক্রান্ত হলে সেখানে শক্তি প্রয়োগ করা হয়। মাদক-অস্ত্র উদ্ধারে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতির আলোকে ব্যবস্থা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মাদকের বিরুদ্ধে র্যাব যুদ্ধ শুরু করেছিল। কিন্তু মাদকের ব্যবহার বেড়েছে, বাড়ছে মাদকসেবী। তাহলে কি র্যাবের অভিযান ব্যর্থ—এমন প্রশ্নের জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বিশ্বজুড়ে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে। কারাগারের অধিকাংশ আসামি মাদকাসক্ত। প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। যেখানেই মাদকের খবর পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। গত সোমবার র্যাব ২ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে। বড় বড় ইয়াবার চালান, আইসের চালান জব্দ করছে র্যাব। সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের কারণে মাদক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা লুকিয়ে কারবার করছেন। কাল বৃহস্পতিবার র্যাব সদর দপ্তরে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হবে। শুক্রবার তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে আইজিপির দায়িত্ব নেবেন। একই দিন র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেবেন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন।