রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
মিয়ানমারকে চাপ দিন, দ. কোরিয়াকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২১ এএম, ১৩ মে,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৫৯ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে জোরালোভাবে চাপ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একইসঙ্গে তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশটির সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘বাংলাদেশ-কোরিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর’ শীর্ষক এক সেমিনারে দক্ষিণ কোরিয়াকে থেকে এসব সহযোগিতা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. মোমেন বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোরিয়া বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছে। মিয়ানমার আপনাদের ভালো বন্ধু। মিয়ানমারের সঙ্গে আপনাদের ভালো সম্পর্ক। গত কয়েক বছরে মিয়ানমারে কোরিয়ার বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে কোরিয়া ভালো পদক্ষেপ নিতে পারে। আপনারা এ বিষয়ে মিয়ানমারকে জোরালোভাবে চাপ দিন। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি মিয়ানমারকে চাপ দিন। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে রাজি হলেও এখনো প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মিয়ানমার আমাদের শত্রু নয়, বন্ধু দেশ। তাদের খারাপ সময়ে আমরা সহযোগিতা করেছি। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিতে রাজি হয়েছে। তারা তাদের লোকদের নিরাপত্তা দিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু এখনো প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। এ বিষয়ে আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই। প্রত্যাবাসন হলে রোহিঙ্গারা নিশ্চিত ভবিষ্যৎ পাবে।
অতীতে আলোচনার মাধ্যমে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়েছে বলে জানান মোমেন। তিনি বলেন, আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অতীতে এ সমস্যার সমাধান করেছি। তার ইতিহাস রয়েছে। ৯০’এর দশকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়েছিল মিয়ানমার। বর্তমানে এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। আমরা এ সমস্যার সমাধান চাই।
প্রকল্প বাস্তবায়নে দ. কোরিয়ার সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ: বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা থেকে বের হয়ে আরও দ্রুত ও টেকসই প্রকল্পে যেতে দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষতার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষতা রয়েছে। এই কাজে দেশটির যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। আর বাংলাদেশের বড় সমস্যা হলো প্রকল্প বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রিতা। আমাদের এখানে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার পর সেটি সহজে শেষ হয় না। তিন বছরের একটা প্রকল্প শেষ হতে দেখা যায় দশ বছর লেগে যায়। আমাদের এখানে বার বার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। যার কারণে খরচও বাড়ে। ড. মোমেন বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া প্রকল্প বাস্তবায়নে কঠোরতা অবলম্বন করে। সেখানে প্রকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন হয় না। সময় মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারলে জরিমানা করা হয়, ডিমোশন করা হয়, অনেক সময় জেলে পর্যন্ত পাঠানো হয়। আবার দক্ষতা দেখালে প্রকল্প পরিচালক নীতি নির্ধারণ পর্যায়ে পদন্নোতি পান। বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশকে এ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া সহযোগিতা করতে পারে।
ডুয়িং বিজনেসেও কোরিয়ার সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ: দক্ষিণ কোরিয়াতে ব্যবসায়িক পরিবেশ অনেক ভালো অ্যাখা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক্ষেত্রে দেশটির সহযোগিতা চেয়েছে। বিশেষ করে ডুয়িং বিজনেসে ভালো অবস্থানে যেতে দেশটির সহযোগিতা চেয়ে ড. মোমেন বলেন, ডুয়িং বিজনেসে দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বে চতুর্থ। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও তাদের অবস্থান ভালো। আমরা ১৬৮তম অবস্থানে। গত তিন বছরে আমরা মাত্র তিনটি র্যাংক পেয়েছি। এই খাতে আমরা কীভাবে ভালো করতে পারি, সে বিষয়ে কোরিয়ার সহযোগিতা চাই। আমরা কিভাবে উন্নতি করতে পারি, সে বিষয়ে তাদের সহযোগিতা চাই।