শুধু ইসিই নয়, সরকার পরিবর্তনে ‘বৃহত্তর গণঐক্যে’র আহবান মির্জা ফখরুলের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৮ এএম, ১২ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:১১ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
শুধু নির্বাচন কমিশনই নয়, সরকার পরিবর্তনে ‘বৃহত্তর গণঐক্যে’র আহবান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এই আহবান জানান। ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে পৌরসভা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনারদের পদত্যাগের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীদের ঢল নামে। এক সময় মানববন্ধন জনসমাবেশে রূপ নেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেককে সরিয়ে দিতে দেখা গেছে। সারাদেশে জেলা ও মহানগরেও এই কর্মসূচি হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সকলকে আহবান জানাতে চাই যে, শুধু নির্বাচন কমিশন নয়। এই সরকার যারা জনগণকে হত্যা করেছে, যারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, তাদেরকে সরে যাওয়ার জন্য আমরা বৃহত্তর গণঐক্য গঠন করি। বৃহত্তর গণঐক্যের ব্যাপারে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানাচ্ছি যে, আসুন আমাদের নিজেদের অধিকার রক্ষা করার জন্য, আমার ভোটের অধিকার রক্ষা করার জন্য, আমার বেঁচে থাকার অধিকারকে রক্ষা করবার জন্য আমরা যেন অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে সারানোর জন্য আন্দোলন শুরু করি।
তিনি বলেন, আমরা এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনারগণ আপনাদের যদি ন্যূনতম কোনো লাজ-লজ্জা থাকে যেটা আপনাদের নাই, আজ পর্যন্ত দেখিনি। আপনাদের এখনই পদত্যাগ করা উচিত, এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। অন্যথায় এদেশের মানুষ আপনাদেরকে সরে যেতে বাধ্য করবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচন কমিশন তারা নিজেরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে তাদের অযোগ্যতার কারণে। তাদের সেই অভিজ্ঞতা নেই যে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন তারা করবে। জাতীয় নির্বাচন গেছে। এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো একইভাবে তারা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। আপনারা দেখেছেন গতকাল গাজীপুরের শ্রীপুরে কিভাবে আমাদের যারা নির্বাচন করছিলেন তাদেরকে নির্যাতন করা হয়েছে, নিপীড়ন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কোনো কিছুই করতে পারে নাই। যখন সম্পূর্ণভাবে ভোট চুরি করে নিয়ে যায় তারপরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা (কেএম নুরুল হুদা) সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলে উনি বলেন, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। এমন সুষ্ঠু হয়েছে যে, তারপরে দেখা যায় শতকরা ১০০ ভাগের বেশিও ভোট কোনো কোনো কেন্দ্রে পড়ে গেছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারাবাহিকতায় ভোটারবিহীন সরকার একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে বলে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার অনির্বাচিত সরকার, ভোট ডাকাতির সরকার। খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এখনো সময় আছে পদত্যাগ করুন। মানে মানে চলে যান। তাহলে এদেশের মানুষের যে ইতিহাস, সেই ইতিহাসে এদেশের মানুষ অবশ্যই একদিন জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হবে, সংঘবদ্ধ হবে এবং আপনাদের চলে যেতে বাধ্য করবে।
দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে তারা দেশকে স্বাধীন করেছিলেন এবং লক্ষ্য ছিলো, আকাক্সক্ষা ছিলো দেশে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। মানুষের আকাক্সক্ষা ছিলো এদেশের মানুষ একটা মুক্ত সমাজে বাস করবে, যার যেটা মত আছে সেটা প্রকাশ করবে এবং তার মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা বাংলাদেশ গড়ে উঠবে যেখানে মানুষ তাদের সমস্ত কথা বলতে পারবে, তাদেরকে বিকশিত করতে পারবে। দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই আকাক্সক্ষাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিয়ে দেশে একটা রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। আপনারা দেখেছেন তাদের লোকেরা কিভাবে দুর্নীতি করছে, কিভাবে চুরি করছে। সমস্ত দেশটাতে তারা একটা লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করে দিয়েছে।
মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণের কাজী আবুল বাশার ও উত্তরের আবদুল আলিম নকির পরিচালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর উত্তরের মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জুু, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ। এছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম পারভেজ, গোলাম সাবের চৌধুরী কিরন, নাসির উদ্দীন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন, আশরাফুজ্জাহান জাহান, ভিপি হানিফ হেলাল তালুকদার, আলাউদ্দিন সরকার টিপু , রেজাউর রহমান তপন, উত্তরা পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম, সহ সভাপতি আবু তাহের সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম সুমন, খিলক্ষেত থানা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি হাফিজুল ইসলাম দেওয়ান ( ফরিদ), পল্লবী থানা নেতা আনিসুর রহমান, সরোয়ার তালুকদার, আহসান উল্লাহ বাবুল, রূপনগর থানা বিএনপি নেতা এম আশরাফুল ইসলাম, আবদুল মান্নান, শাহ আলম, কাজী সাব্বির, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, বিএনপি নেতা রাজিব আহসান পাপ্পু, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কৃষিবিদ মেহেদি হাসান পলাশ, মোঃ আলিম হোসেন, মীর মমিনুর রহমান সুজন, এম জাহাঙ্গীর আলম, শফিকুল ইসলাম শফিক, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।