গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশে উন্নয়ন হচ্ছে - প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০১ এএম, ১৩ মার্চ,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:২৪ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টানা ১৩ বছর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। দেশকে কেউ আর পেছনে টানতে পারবে না। ’৭৫-এর পর একটা কালো অধ্যায় ছিল, সেই কালোমেঘ কেটে গেছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
গতকাল শুক্রবার (১১ মার্চ) রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসীদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা তার সফরকালীন আবাসস্থল থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর ১৩ বছর পূর্ণ করছি। দেশের মানুষের ভোট এবং সহযোগিতায় রাষ্ট্র পরিচালনা করার সুযোগ পেয়েছি। আমার দৃষ্টিতে এটা হচ্ছে, জনগণের সেবা করার সুযোগ। ক্ষমতাটা আমার কাছে কোনো ভোগের বস্তু নয়, জনগণের সেবা করার সুযোগ। যে আদর্শ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করেছেন, সেটা পূর্ণ করা। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ, দারিদ্র্যমুক্ত একটি দেশ। যে দেশ সম্মানের সঙ্গে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। বাঙালি জাতি মাথা উঁচু করে চলবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবো।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে যদি একটু দেখেন, লক্ষ্য করবেন- ’৭৫-এর পর এ দেশে ১৯টা ক্যু হয়েছে। একেকটা ক্যু হয়েছে সেনাবাহিনীর বহু সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে, বিমানবাহিনীর সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে। রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা, গুম করা হয়েছে। অস্থিরতা ছিল, বার বার ক্ষমতা বদল হয়েছে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ছিল, গণতান্ত্রিক ধারা কখনোই অব্যহত ছিল না। দেশের জনগণ ও প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা যারা প্রবাসী আপনাদের কাছ থেকেও আমরা সমর্থন পেয়েছি, সহযোগিতা পেয়েছি। সেই কারণেই আজকে দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে এটা সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে আসবো। আজকে অন্তত এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে, স্বীকৃতি পেয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, এ দেশে কোনো দরিদ্র থাকবে না। আজকে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি যে, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না। সরকার থেকে তাদের ভূমি ও জমি নিয়ে ঘরবাড়ি করে দিচ্ছে। তাদের জীবনটাই পাল্টে যাচ্ছে। তাদের এখন অসহায় হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় না। আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। কাজেই প্রত্যেকটা মানুষের জীবনমান উন্নত করার পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর পুষ্টি নিরাপত্তাও আমরা দিচ্ছি। আমাদের আয়ুষ্কালও বেড়ে এখন ৭২ থেকে ৭৩ বছরে দাঁড়িয়েছে। এখন হতদরিদ্র ভাবটা মানুষের মাঝে নেই, থাকবেও না। তার জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সবাইকেই অবদান রাখতে হবে। একদিনে এটা সম্ভব না। একটা গাছ লাগালেও ফল খেতে সময় লাগে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে গত ৭ মার্চ সন্ধ্যায় পাঁচদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আবুধাবি যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেন আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে চারটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সফর শেষে ১২ মার্চ দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থল উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রান্তে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আবুধাবি প্রান্তে ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, এফবিসিআইআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এসময় রাস আল খাইমার প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়কমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি তাজ উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর। এরপর প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাদেশিক শহর রাস আল খাইমার বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।