ইউএনও কীভাবে সভাপতি হন-হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৭ পিএম, ৭ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৩৩ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
চেয়ারম্যানদেরকে বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) কীভাবে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন কমিটিতে সভাপতি হন তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল ৬ জানুয়ারি, বুধবার এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আগামী ১০ দিনের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশ্লিষ্টদেরকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটকারী সংগঠন বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হাসাম এমএস আজিম। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল।
এর আগে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দুমকি উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ ও অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান বীরু, উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রিনা পারভীন, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ ও ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আক্তার প্রমুখ এ রিটটি দায়ের করেন।
জানতে চাইলে রিটকারী হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের অনুমোদনবিহীন ১৭টি বিভাগের কার্যসম্পাদন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারী করেছেন। সাংবিধানিক নির্দেশনা ও আইন অনুযায়ী প্রশাসনিক একাংশ নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ বিদ্যমান থাকা অবস্থায় উপজেলা প্রশাসন ব্যবহার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। উপজেলাধীন ১৭টি বিভাগের অধিকাংশ কমিটিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে আইনবহির্ভূতভাবে উপদেষ্টা করার পরিপত্র কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আদালত আদেশে বলেছেন, উপজেলা পরিষদের অধীনে ১৭টি বিভাগের প্রশাসনিক ও আর্থিক শৃঙ্খলা চেয়ারম্যান এর অনুমোদন বিহীন সম্পাদন করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ ও ২০১১ (সংশোধীত) অনুযায়ী হস্তান্তরিত বিভাগসমূহের অনুমোদন ও জবাবদিহিবিহীন কার্যসম্পাদন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। এগুলো জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন আদালত।’
আইনের ৩৩ ধারার (১) উপধারায় বলা হয়েছে, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবেন।’৩৩-এর (২) উপধারায় বলা হয়েছে, ‘পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিপালন এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলি পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করিবেন।’
রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম বলেন, ‘পরিষদ কোনো সিদ্ধান্ত দিলে তা ইউএনও বাস্তবায়ন না করলে পরিষদের করণীয় কিছু থাকে না। কারণ ইউএনওর উপজেলা পরিষদের কাছে জবাবদিহির বাধ্যবাধকতা আইনে রাখা হয়নি। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার স্বাধীনতাকে এই একটি ধারার মাধ্যমে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই ৩৩ ধারা সংবিধানের ৭ ও ৫৯ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। ৫৯ (১)-এ স্থানীয় শাসন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘আইনানুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হবে।’