খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে ফেরত পাঠানো হবে কি না ভাবতে হবে : তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০৪ পিএম, ২৬ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৫৮ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে ভাষায় কথা বলেছেন, তা অগ্রহণযোগ্য। চিকিৎসার অজুহাতে বিএনপি খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে চায়, যেন সেখানে গিয়ে রাজনীতি করতে পারেন।
আজ শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া জামিন পাননি, তাঁর সাজা মওকুফ হয়নি। এরপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে তাঁকে কারাগারের বাইরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। ঘরে থাকার, আত্মীয়–পরিবার–পরিজনের সঙ্গে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে ভাষায় কথা বলেছেন, এখন মনে হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা খালেদা জিয়ার জন্য প্রদর্শন করেছেন, সহানুভূতি প্রদর্শন করেছেন, সেটি তাঁরা (বিএনপি নেতারা) অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন ভাবতে হবে, প্রধানমন্ত্রী যে প্রশাসনিক আদেশে, আইনি ক্ষমতাবলে তাঁকে (খালেদা) কারাগারের বাইরে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, সেটি পুনর্বিবেচনা করা হবে কি না; তাঁকে আবার কারাগারে ফেরত পাঠানো হবে কি না, তা ভাবতে হবে।’
খালেদা জিয়াকে প্রতিহিংসাপরায়ণ মানুষ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ বলেই তিনি নিজের জন্মের তারিখ পাল্টে দিয়ে ১৫ আগস্ট কেক কাটেন। প্রতিহিংসাপরায়ণতার কারণেই তাঁর সরকারের সময়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়। এমন একজন প্রতিহিংসাপরায়ণ মানুষের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সহানুভূতি দেখিয়েছেন, সেটা বিএনপি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখন আমাদের ভাবতে হচ্ছে, তাঁকে (খালেদা) আবার কারাগারে ফেরত পাঠানো যায় কি না?’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর এবং সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বিএনপি যদি চায়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসক দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তাঁর আসলে কী হয়েছে; সেটি পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা যেতে পারে। সেগুলোর তোয়াক্কা না করে শুধু বিদেশ নিয়ে যাওয়ার যে ধোঁয়া-দাবি তুলছে, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিএনপি খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে একটি অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে তাঁকে বিদেশ পাঠিয়ে দিতে চায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং খালেদা জিয়া সেখানে গিয়ে যেন রাজনীতি করতে পারেন, সেটি করছেন তারেক রহমান। সুতরাং তাদের যে দাবি, সেটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ছাত্রদের বাসভাড়া আন্দোলন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজেও যখন কলেজের ছাত্র ছিলাম, নিজেও বাসে হাফ ভাড়া দিয়েছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়তাম, তখনো হাফ ভাড়া দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। একটি বাসে ৪০-৫০ জন যাত্রী থাকে, সেখানে হয়তো ২–৩ জন ছাত্র থাকে। হয়তো স্কুল ছুটির সময় অথবা যাওয়ার সময় একটু বেশি থাকতে পারে। সুতরাং আমি মনে করি, বাসভাড়া পরিবহনমালিকেরা ও পরিবহন কোম্পানিগুলো বসে ঠিক করে নিতে পারে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।
মন্ত্রী এক দিনের সফরে ঢাকা থেকে বিমানে কক্সবাজার পৌঁছান। সন্ধ্যায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাটোয়ারটেক সৈকতের তারকা হোটেল ‘রয়েল টিউলিপ বিচ রিসোর্ট’–এ জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত একটি সভায় হাছান মাহমুদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।