বাংলাদেশের সড়ক ব্যবহারে ট্রানজিট ফি দিতে নারাজ ভারত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৮ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ১১:৩১ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বাণিজ্য নগরী চট্টগ্রাম, মোংলা সমুদ্রবন্দর হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তর দিয়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনে সড়ক ব্যবহারের ফি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভারত। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রতি টন ভারতীয় পণ্য পরিবহনে কিলোমিটার প্রতি দুই টাকা ফি নির্ধারণ করেছে। কিন্তু ভারত এই ফি দিতে নারাজ। দেশটি ফি-মুক্ত অথবা স্বল্প ফি'তে পণ্য পরিবহন সুবিধা চায়।
জানা যায়, প্রথমে জাহাজে করে এনে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে পণ্য খালাস করা হবে। তারপর বাংলাদেশের আটটি সড়ক পথ ব্যবহার করে এসব পণ্য যাবে আসাম ও ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে। ইতোমধ্যে গত জুলাই মাসে পরীক্ষামূলকভাবে একবার এভাবে ত্রিপুরায় পণ্য পাঠিয়েছে ভারত। তবে পরীক্ষামূলক সেই ট্রানজিটের পর আর কোনো পণ্য বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যায়নি।
বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রতি টন পণ্য পরিবহনে কিলোমিটার প্রতি ২ টাকা করে নির্ধারণ করেছে। এতে করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ফেনী-কুমিল্লা হয়ে আখাউড়া বন্দর পর্যন্ত ২৩০ কিলোমিটার পথ যেতে ১৫ টন পণ্য পরিবহনে ভারতকে গুনতে হবে ৬ হাজার ৫৬০ টাকা। এই হিসেব অনুযায়ী নির্ধারণ হবে সবগুলো রুটের ট্রানজিট ফি। কিন্তু এতেই ভারতের আপত্তি।
এই জটিলতার কারণেই পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহনের পর গত পাঁচ মাস ধরে এটি বন্ধ আছে। ভারতের ভাষ্য, ফি একেবারেই থাকবে না, আর যদি থাকেও তাহলে সেটা হওয়া উচিত খুবই সামান্য। ইতোমধ্যে তারা এই আপত্তির কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলকে।
তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন উপদেষ্টা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের দৃষ্টিকোণ থেকে ট্রানজিট ফি’র বিষয়টি আরেকবার বিবেচনা করার জন্য চিঠি দিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগকে (সওজ)। সেই চিঠির উত্তরে সওজ জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তির ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী ট্রানজিট ফি আদায়ের সুযোগ রয়েছে। আর ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৪ সালের টোল নীতিমালা অনুযায়ী।
সড়ক ব্যবহারের ফি ছাড়াও পণ্য পরিবহনে ডকুমেন্ট চার্জ ৩০ টাকা, প্রতি টনে ট্রান্সশিপমেন্ট চার্জ ২০ টাকা, প্রতি টনে সিকিউরিটি চার্জ ১০০ টাকা, প্রতি টনে এস্কর্ট চার্জ ৫০ টাকা, প্রতি টনে প্রশাসনিক চার্জ ১০০ টাকা, প্রতি কনটেইনারে স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশের রাজস্ব বোর্ড। এ ছাড়া ইলেক্ট্রিক লক ও সিল বাবদ প্রতি টনে প্রথম ৪৮ ঘণ্টায় ৬০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। সড়ক ব্যবহারের মাশুল ছাড়াও 'ইলেক্ট্রিক লক ও সিল' ফি নিয়েও আপত্তি রয়েছে ভারতের।