খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার সুযোগ নেই : আইনমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৫ পিএম, ১৬ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১২:০৯ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে নতুন করে জেলে গিয়ে তাকে আবেদন করতে হবে। ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারা অনুযায়ী একবার আবেদন নিষ্পত্তি হওয়ার পর একই বিষয়ে আবার নতুন আবেদন গ্রহণ করার সুযোগ নেই।’
আনিসুল হক বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারার ওপর ভারত, পাকিস্তানসহ দেশের উচ্চ আদালতের অনেক ডিসিশান রয়েছে। রুমিন ফারহানা এসব দেখতে পারেন। এ মুহূর্তে খালেদা জিয়াকে কারাগারে গিয়ে আবেদন করা ছাড়া বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদনের সুযোগ নেই।’
এর আগে গতকাল সোমবার বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন পরিপ্রেক্ষিতে তার ভাই শামীম ইস্কান্দার পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছেন। পরে আবেদনটির বিষয়ে আইনি মতামত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে এর আগে গত ৫ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। পরে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেই আবেদন ‘মঞ্জুর করা যাবে না’ মর্মে মতামত দেয় আইন মন্ত্রণালয়। আইন মন্ত্রণালয়ের এ মতামতের ওপর ভিত্তি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবেদনটি নাকচ করে দেয় তখন।
খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে করা এ আবেদন মঞ্জুর না করার বিষয়ে আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তখন জানিয়েছিলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার আলোকে খালেদা জিয়ার সাজা ও দণ্ডাদেশ আগেই স্থগিত করে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির একই ধারা অনুযায়ী, দ্বিতীয়বার তাকে অনুরূপ সুযোগ দিয়ে বিদেশে যেতে দেওয়ার সুযোগ নেই।’
৭৬ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রারাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতার জন্য টানা ২৬ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন খালেদা জিয়া।
এর আগে এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। পরে করোনা পরবর্তী জটিলতায় ২৭ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় এক মাসের বেশি সময় হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন। পরে করোনার টিকা নিতে তিনি দুদফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে গত বছরের ২৫ মার্চ শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার।