শ্রম আইনের অনেক ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক : জিপিইইউ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৯ এএম, ৩১ অক্টোবর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:১৯ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২৪
শ্রম আইনের অনেক ধারা বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ম করে বলে মনে করছে গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (জিপিইইউ)। এসব ধারার মধ্যে ২৬, ২৭(৩ক), ১৭৯ (২), ১৮০ (১)(খ), ১৮৭ দফার শেষাংশের ধারাগুলো অন্যতম বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জিপিইইউয়ের সাধারণ সম্পাদক মাতুজ আলী কাদের।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০০৬ সালে শ্রম আইন পাস হওয়ার শুরুতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ২০১৩ এবং ২০১৮ সালে বড় আকারে সংশোধনী হওয়া সত্ত্বেও একটি গণতান্ত্রিক শ্রম আইন অধরাই রয়ে গেছে। শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যার বিচারে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান ও কল-কারখানার মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬। বেশ কয়েকবার আইনটিতে সংশোধনী আনা হলেও এখনো এটি শ্রমবান্ধব হয়েছে বলা যায় না। শ্রম আইনের বিভিন্ন ধারা, উপধারায় প্রত্যক্ষভাবে শ্রমিক স্বার্থবিরোধী ধারা, উপধারা সন্নিবেশিত রয়েছে। শ্রম আইনের পুরো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা আমাদের আজকের উদ্দেশ্য নয়। আইনে কিছু অধিকার দেয়া থাকলেও এই আইনেই কিছু ধারা প্রয়োগ করে আবার তা ক্ষুণ্ম করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ৩১৩ ধারায় বলা আছে মালিক বা মালিকপক্ষ একজন শ্রমিকের প্রতি অসৎ শ্রম-আচরণ করলে তাতে ক্ষুব্ধ বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে একজন শ্রমিক বা শ্রমজীবী নিজে তার প্রতিকার প্রার্থনা করে শ্রম আদালতে দরখাস্ত করতে পারবেন না। শ্রম আদালতে যাওয়ার আগে মহাপরিচালকের কাছে অনুমতির জন্য বা তার পক্ষে মামলা দায়ের করার জন্য দরখাস্ত করতে হবে। বলা দরকার মহাপরিচালক নিজে বা তার দফতরের অফিসারদের বিষয়ে আমরা কখনই আশাবাদী হতে পারি না যে, তারা সততার সাথে কাজটি করবেন।
মাতুজ আলী কাদের বলেন, এসব বিষয় বিবেচনা করে গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ২৯, ৩১, ৩৮ ও ৪০ অনুচ্ছেদ কার্যকরণের জন্য সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধিকারবলে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর রিট পিটিশন করে। গত ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ সরকারের আইন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের দুজন সচিব, মহাপরিচালক (শ্রম) ও অপর তিনজনের প্রতি রুলনিশি জারি করেন এবং চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দাখিল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, গ্রামীণফোন এপ্লয়িজ ইউনিয়ন বিশ্বাস করে, অসৎ শ্রম আচরণের বিচার প্রার্থনার ক্ষেত্রে তৃতীয় কোনো পক্ষের ওপর শ্রমিকের নির্ভরতা দূর হলে দেশের আপামর শ্রমিক এ থেকে উপকৃত হবে এবং দেশের সর্বস্তরের শ্রমিক সংগঠন তথা শ্রমিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে এ যাত্রাপথে আমরা পাশে পাব।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জিপিইইউয়ের সভাপতি ফজলুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।