রপ্তানি বাড়াতে নতুন পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৬ পিএম, ২৬ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৪৯ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেসব ব্যবসায়ী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসবেন, তাঁরা এখান থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাজার ধরারও একটা সুযোগ পাবেন। তাঁর সরকার সেভাবেই দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে ব্যবসায়িক যোগাযোগের একটি সেতুবন্ধ হিসেবেই গড়ে উঠবে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২১’ উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়ালি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী উদ্যোক্তা ও অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সাত দিনব্যাপী এ সম্মেলন আমাদের দেশের জন্য সম্ভাবনাময় নয়টি খাত, যেমন: অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি ও ফিনটেক, চামড়া, ওষুধ, স্বয়ংক্রিয় ও ক্ষুদ্র প্রকৌশল, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাট-বস্ত্রশিল্পসহ অতি চাহিদাসম্পন্ন ভোগ্যপণ্য উৎপাদন এবং ক্ষুদ্র ব্যবসাকে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করেছে, যা সময়োপযোগী।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন আর কী কী পণ্য আমরা উৎপাদন করতে পারি এবং রপ্তানি করতে পারি, সেটাও গবেষণা করে বের করতে হবে। কোন কোন দেশে কী কী পণ্যের চাহিদা রয়েছে, সেটা অনুধাবন করে সেই পণ্য আমরা বাংলাদেশে উৎপাদন করতে পারি কি না, সেটাও আমাদের বিবেচনা করতে হবে। কাজেই আমাদের যাঁরা ব্যবসায়ী বন্ধু রয়েছেন, বিশেষ করে বেসরকারি খাতে, তাঁদের প্রতি আমি অনুরোধ জানাব, আপনারা এই বিষয়ের দিকে বিশেষভাবে নজর দেবেন। কারণ, আমাদের রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এ সম্মেলনের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য দেশি-বিদেশি শিল্পোদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ী খাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ফলে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি পণ্যের নব নব দ্বার উন্মোচিত হবে। রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে এবং বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে।’
কোনো দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ কতটা উন্নত, তা বোঝাতে বিশ্বব্যাংকের ‘ইজি অব ডুয়িং বিজনেস ইনডেক্স’ ব্যবহার করা হয়ে থাকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালে ওই ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান আগের বছরের ১৭৬ থেকে ১৬৮–তে উন্নীত হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যবসার বিভিন্ন সূচক উন্নয়নে বিশ্বের সর্বোচ্চ ২০টি সংস্কারকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ওই ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান দুই অঙ্কে, অর্থাৎ ১০০–এর নিচে নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিশেষায়িত দল গঠন করে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৮টি দেশে একতরফা শুল্কমুক্ত রপ্তানি–সুবিধা পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্যিক জোটের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি, যেমন: আঙ্কটাড, ইউএন-এসকাপ, ইউরোপীয় কমিশন, ডি-৮, বিমসটেক, আফটা ইত্যাদি।’
সম্প্রতি বাংলাদেশের ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আশা করি, ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী আমরা ২০২৩ সালের মধ্যে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হব। ইতিমধ্যেই দেশে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে এবং ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ–সুবিধা পাচ্ছে।’