পিএসসির প্রশ্নফাঁস করলে ১০ বছরের কারাদন্ড : মন্ত্রিপরিষদ সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৮ এএম, ২০ অক্টোবর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১১:১৮ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ড হবে। এমন শাস্তির বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইন, ২০২১’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।
তিনি বলেন, এটা ১৯৭৭ সালের অর্ডিন্যান্স ছিল। হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সেটা নিয়ে আসা হয়েছে। এটা রুল বেইজড আইন। ম্যাক্সিমাম জিনিসগুলো রুল দিয়ে করে নেয়া হবে। জেনারেল একটা প্রভিশন লে-ডাউন করে দেয়া হয়েছে আইনটাতে। খসড়া আইনে ১৫টি ধারা আছে। যেহেতু রুল বেইজড আইন, সব প্রসিডিউরগুলো পরবর্তীতে রুলের মাধ্যমে করে দেয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়ায় কমিশন গঠন করার কথা বলা হয়েছে। সেই বিষয়টির ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। কমিশনে কমপক্ষে ছয়জন সদস্য থাকবেন, তবে সদস্য কোনোভাবেই ১৫ জনের বেশি হবে না। একটা আউট লাইন করে দেয়া হয়েছে। বাকি ফরমেশনটা রুল দিয়ে করে দেয়া হবে। তাদের (পিএসসি) দায়িত্ব হলো সংবিধানের ১৪০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন রিক্রুটমেন্ট ও অন্যান্য অপিনিয়মের বিষয়ে তারা দায়িত্ব পালন করবে। কমিশনকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তা প্রদান করতে হবে, এমন একটা ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আইনে।
পরীক্ষা পদ্ধতি কীভাবে হবে সেটার একটা আউট লাইন খসড়া আইনে করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে রুল দিয়ে ব্যাখ্যা দেয়া হবে। খসড়া আইনে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা সংক্রান্ত কিছু অপরাধের কথা বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কেউ যদি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করে তাহলে সর্বোচ্চ ২ বছর, সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ড হতে পারে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকলে খসড়া আইনে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ডের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩ বছর কারাদন্ড বা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে। বেশ শক্ত একটা স্ট্যান্ড নেয়া হয়েছে। জরিমানাটা সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, উত্তরপত্রের জালিয়াতির সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন তাদের সর্বোচ্চ ২ বছর ও সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ড হতে পারে। কোনো পরীক্ষার্থী যদি অসদুপায় অবলম্বন করেন বা অন্য কোনো ব্যক্তিকে অসদুপায়ে সহযোগিতা করে তাহলে সেও সর্বোচ্চ ২ বছর ও সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদন্ড এবং অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবে। পরীক্ষা সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে খসড়া আইনে। পরীক্ষা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি যদি কোনো অপরাধ করে তাহলে দুই বছরের কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ড হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, মোবাইল কোর্টের মধ্যেও এটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমেও পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে যারা যুক্ত থাকবেন, তাদের বিচারের আওতায় এনে সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দেয়া যেতে পারে। কিছুদিন থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পিএসসির মাধ্যমে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়া আইনে আছে, সরকার প্রদত্ত অন্য কোনো দায়িত্ব (পালন করবে পিএসসি)। সেটা রুল দিয়ে করে দেয়া যাবে। কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তৃতীয় শ্রেণির নিয়োগের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখনও প্রিসাইজ কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিভিন্ন ফোরামে, সর্বোচ্চ ফোরামে, এ জাতীয় আলোচনা হয়েছে- আলাদা একটা পিএসসি গঠন করে করা (তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ) যায়। তবে প্রিসাইজ কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।