শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০৯ পিএম, ৯ আগস্ট,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৩৪ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখার ঘটনায় মামলায় ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
আজ সোমবার (৯ আগস্ট) ৮৬ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রদানকারী বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান রায়ে স্বাক্ষর করেন।
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, শেখ হাসিনা নারী নেত্রী হওয়ার কারণেই বার বার জঙ্গিদের এমন হত্যাচেষ্টার মুখে পড়তে হয়েছে। এর আগে, চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০ বছরেরও বেশি সময় পর ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে নিম্ন আদালতের রায় অনুমোদন এবং আসামিদের আপিল নিস্পত্তি করে হাইকোর্ট রায় দেন।
নিম্ন আদালত আরও চারজনের যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছিলেন, হাইকোর্ট তাদের একজনকে খালাস দিয়েছেন এবং বাকিদের সাজা বহাল রেখেছেন। যাদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে প্রত্যেকেই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জেহাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।
যেসব আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে তারা হলেন- ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
হরকাতুল জেহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান মামলাটিতে মূল আসামি ছিলেন। কিন্তু অন্য মামলায় এই জঙ্গি নেতার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এই মামলা থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
২০০০ সালের ২১ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজের মাঠে তৎকালীন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কোটালিপাড়া থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করা হয়। ২০০১ সালের ১৫ নভেম্বর মুফতি হান্নানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩৪ জন। অন্য মামলায় হুজি নেতা মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এই মামলার রায়ে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের জুন মাসে অধিকতর তদন্ত করে আরও নয়জনকে অভিযুক্ত হিসাবে যুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দেয়।
তখন মামলাটি পাঠানো হয় ঢাকা-২ দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে। সেই ট্রাইবুনালে ২০১৭ সালের ২০শে আগষ্ট বিচার শেষ করে রায় দেয়া হয়। রায়ে ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। এই রায়ে গুলি করে তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা বলা হয়।
এরপর হাইকোর্টে রায় গেলে ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। আজকে সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশিত হলো।