অপরাজিত মুশফিক, বাংলাদেশ থামল ৫৪১ রানে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৬:৪৬ পিএম, ২৩ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:১৬ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ইনিংস ঘোষণাটা কিছুটা হঠাৎ করেই। বাংলাদেশ দলের ড্রেসিং রুম থেকে যে ঘোষণাটা তৃতীয় দিন মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই এসে যাবে, এটা বোধ হয় ভাবেননি মুশফিকুর রহিম। ৬৮ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস অসমাপ্ত রাখা মুশফিক তাহলে নিশ্চয়ই একটু হাত খুলে খেলতেন!
শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক মুমিনুল হক ইনিংস ঘোষণা করে দিলেন স্কোরবোর্ড ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে রেখেই। দিনের হিসেবে পৌনে তিন দিন আর ১৭৩ ওভার ব্যাটিং করার পর মুমিনুলের ইনিংস ঘোষণাটা শ্রীলঙ্কান ফিল্ডারদের আনন্দিত করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তৃতীয় দিনের সকালটা পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম দুই দিনের মতো হয়নি। গতকাল বিকেলে আলোর স্বল্পতার কারণে একটু আগেভাগেই খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পর আজ খেলা শুরু হয় ১৫ মিনিট আগে। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম আর লিটন দাস আত্মবিশ্বাস নিয়েই খেলা শুরু করেছিলেন।
উইকেটের চারদিকে খেলে টুকটাক রান তুলে নিচ্ছিলেন। ৪৭৪ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করা বাংলাদেশের ৫০০ রানের কোটা পেরিয়ে যেতে তাই খুব বেশি সময় লাগেনি। ৪৩ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিক প্রথমে ফিফটি পেরোন। এরপর লিটন। যদিও লিটন ৫০-এ পৌঁছেই শিকার হন ধনঞ্জয়া ডি সিলভার। লিটন ক্যাচ দেন বিশ্ব ফার্নান্দোকে। লিটন ৫০ করেছেন ৬৭ বলে, ৫টি চার ও একটি ছক্কায়।
লিটন ফেরার পর উইকেটে আসা মেহেদী হাসান মিরাজকে ঘিরে মজার একটা ঘটনা ঘটেছে আজ। সুরাঙ্গা লাকমলের বলে প্রথমে মিরাজের বিপক্ষে কট বিহাইন্ডের আবেদনে সারা দেন আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। মিরাজ রিভিউ নেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই। রিপ্লেতে দেখা যায, বলের সঙ্গে ব্যাটের কোনো সংযোগ না লাগার পরেও মিরাজকে আউট দিয়েছেন ধর্মসেনা।
এর পরের বলেই ঠিক একই ধরনের ঘটনায় আম্পায়ার ধর্মসেনা সারা দেননি। কিন্তু উইকেটকিপার নিরোশান ডিকভেলা রিভিউ নিয়ে নেন অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নের সঙ্গে আলাপ না করেই। রিপ্লে দেখে করুনারত্নের রাগ হওয়ারই কথা। বল মিরাজের ব্যাটের অনেক বাইরে দিয়ে যাওয়ার পরেও ডিকভেলা কী মনে করে রিভিউ নিয়েছিলেন বোঝা গেল না।
তৃতীয় বলে মিরাজই বাঁচতে পারেননি। লাকমলের বলটিতে খোঁচা দিয়ে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। এরপর উইকেটে এসে তাইজুল বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। বিশ্ব ফার্নান্দোর চতুর্থ শিকারে পরিণত হন তিনি। উইকেটের পেছনে আবারও ক্যাচ নেন ডিকভেলা।
অন্যপ্রান্তে উইকেট পড়তে দেখলেও মুশফিক কিন্তু তেমন হাত খোলেননি। তিনি খেলছিলেন তাঁর মতোই। হয়তো ড্রেসিং রুম থেকে ইনিংস ঘোষণার বার্তাটা আগেভাগে তাঁর কাছে দেওয়া হয়নি। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ইনিংস ঘোষণার ব্যাপারটা মাঠে পৌঁছানো গেলে রানের চাকাটা হয়তো শেষ দিকে আরও একটু দ্রুত ঘোরান যেত।
শেষ পর্যন্ত মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৬৮ রানে। ১৫৬ বলে ৬টি বাউন্ডারি মেরে ইনিংসটি খেলেছেন তিনি। আজ সকাল থেকে ১৮ ওভার ব্যাটিং করে ৬৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। মধ্যাহ্ন বিরতির আগ দিয়ে ইনিংস ঘোষণার কারণে শ্রীলঙ্কা বিরতির আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাবে আধা ঘণ্টা।
নতুন বলে আজও ভালো বোলিং করেছেন শ্রীলঙ্কান বোলাররা। উইকেট থেকে কিছুটা সহায়তাও ছিল তাদের। বাংলাদেশি গতি বোলাররা সেই সাহায্যটা আশা করতেই পারে। স্পিনাররাও সকাল কিছুটা টার্ন পেয়েছেন। এসবই বাংলাদেশের বোলারদের জন্য উৎসাহ-জাগানিয়া ব্যাপার। দুই অভিজ্ঞ স্পিনার মিরাজ আর তাইজুল এখন সেই সুবিধা নিতে পারলেই হয়। তাসকিন, ইবাদত, আবু জায়েদরা লাকমল, বিশ্ব ফার্নান্দোদের মতো বোলিং করলেও কিন্তু ৫৪১ রানের জবাবে লঙ্কানদের চাপে রাখা যাবে।