পেসার থেকে স্পিনার, সঙ্গে ব্যাটিং ওপেন করে চমক দেখালেন সুজন
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:৩৭ এএম, ২০ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:১২ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
‘সীমিত সামর্থ্যের সর্বোচ্চ প্রয়োগ’- ফাইটার উপাধি থাকা খালেদ মাহমুদ সুজনের ক্যারিয়ারে বহুল উচ্চারিত বাক্য এটি। প্রতিপক্ষ, মাঠ, কন্ডিশন কিংবা টুর্নামেন্টের আবহ যেমনই হোক না কেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে যাওয়া ক্রিকেটারের নামই ছিল খালেদ মাহমুদ। যে অভ্যাসটা তার রয়ে গেছে ক্রিকেট থেকে অবসরের প্রায় দেড় দশক পরেও। দেশের সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে মিলনমেলা হিসেবেই গত কয়েক বছর ধরে আয়োজিত হচ্ছে বিশেষ টুর্নামেন্ট লিজেন্ডস চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এবার এতে আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। প্রথাগত ফরম্যাটের বাইরে খেলাগুলো হচ্ছে দশ ওভার দশ বল তথা ৭০ বলের। বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এ টুর্নামেন্ট জমে উঠতে শুরু করেছে এরই মধ্যে। আর এতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে সাবেক ক্রিকেটারদের লড়াকু মনোভাব। টুর্নামেন্টের প্রথম দিন ব্যাটে-বলে মাত করেছেন তারকা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ রফিক। আজ (শুক্রবার) দ্বিতীয় দিন ভিন্ন স্বাদ নিয়ে হাজির হলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার খালেদ মাহমুদ সুজন। দিনের প্রথম ম্যাচে জাদুবে স্টারসের বিপক্ষে নিজের চিরচেনা পেস বোলিং রেখে করলেন অফস্পিন। এর আগে মিডল অর্ডার থেকে নিজেকে প্রমোশন দিয়ে নেমে যান ওপেনিংয়ে। নিজের ৮৯ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৯৫ ইনিংসে ব্যাট হাতে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন সুজন। যেখানে ইনিংস সূচনা করেছেন মাত্র একবার। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে ১৯ বলে করেছিলেন ৬ রান। এছাড়া আর কখনও পাঁচ নম্বরের আগে নামেননি। এছাড়া ক্যারিয়ারজুড়ে সবসময় মিডিয়াম পেস বোলিংই করে গেছেন তিনি। তবে এবার কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত লিজেন্ডস চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ব্যাটে-বলে চমক দিলেন সুজন। প্রথম দিন বোলিংটা তেমন ভালো না হলেও, এবার পরিকল্পনা বদলে সফল এক্সপো রেইডার্সের আইকন খেলোয়াড় সুজন। বয়স হয়ে যাওয়ায় শারীরিক সক্ষমতা কমলেও, মনের তাড়নায়ই মূলত নতুন ভূমিকায় খেলেছেন তিনি।
জাদুবের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট হাতে ইনিংস সূচনা করতে নেমে ৯ বলে ১৩ রান করেন সুজন। পরে ফিল্ডিংয়ে নেমে মিডিয়াম পেসের বদলে করেন অফস্পিন। তার স্পিনে বোল্ড হন হুমায়ুন কবির, লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন জুয়েল হাবিবি। সবমিলিয়ে নিজের ২ ওভারে মাত্র ৮ রান খরচায় ২ উইকেট নেন সুজন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না হলেও দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে এর আগেও অফস্পিন করেছেন সুজন। শুধু তাই নয়, নব্বইয়ের দশকে জাতীয় লিগের ম্যাচে রাজশাহীর বিপক্ষে স্পিন বোলিং করে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি। আজ আবার স্পিন করার দিন ফিরে এলো সেই স্মৃতি। জাদুবে স্টারসকে ৫৫ রানের বড় ব্যবধানে হারানোর পর নিজের খেলার নিয়ে সুজন বলেন, ‘আমি তো অফস্পিনার ছিলাম না। কিন্তু ফার্স্ট ক্লাসে আমার অফস্পিনে পাঁচ উইকেট আছে, রাজশাহীর বিপক্ষে। তবে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আসলে অফস্পিন করতে পছন্দ করি। কারণ বাঁহাতির জন্য কঠিন হবে খেলা। সঙ্গে যোগ করেন, ‘মাঠে আসলে অবশ্যই আমরা লড়াইয়ের চেষ্টা করি। তবে সবার সাথে দেখা হওয়াটাই মূল প্রায়োরিটি। এখন তো বয়স হয়ে গেছে। আগের মতো আর পারা যায় না। তবু চেষ্টা থাকে ফাইট করার। (ভেতর থেকে ফাইট দেয়ার তাড়না) তো আসেই। শরীর ওভাবে সাপোর্ট করে না। কিন্তু মানসিকভাবে তাড়না আসে, সেই চেষ্টাটাই থাকে। সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে আয়োজিত এ টুর্নামেন্টের ব্যাপারে সুজনের মূল্যায়ন, ‘একটা গেট টুগেদার হচ্ছে। অনেক বছর একসাথে কাটিয়েছি, খেলেছি। এখন ব্যস্ততার কারণে অনেকের সাথে দেখা হয় না। এই টুর্নামেন্টটা হলে সবার সাথে দেখা হয়, কথা হয়। ছোটবেলার কথাগুলো মনে পড়ে। নিজেদের মধ্যে কথা বলি, অনেক নস্টালজিক হয়ে যাই আমরা।’