শেষ পর্যন্ত ড্র হলো চট্টগ্রাম টেস্ট
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯:৩০ পিএম, ১৯ মে,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১১ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
তাইজুল ঘূর্ণিতে শেষ দিনে আভাস দিচ্ছিল রোমাঞ্চের। কিন্তু রোমাঞ্চে পানি ঢেলে দিলেন দিনেশ চান্দিমাল ও নিরোশান ডিকভেলা। সপ্তম উইকেটে এই জুটি ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশের কোনো বোলার। অনুমিতভাবে ড্র হয়েছে চট্টগ্রাম টেস্ট।
প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা করেছিল ৩৯৭ রান। জবাবে ৪৬৫ রান করে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে করে ৬ উইকেটে ২৬০ রান। দিনের খেলা বাকি ছিল ১৫ ওভারের মতো। ম্যাচের রেজাল্ট তাতে বের করা মুশকিল। আর তাই ম্যাচ ড্রয়ের ঘোষণা দেন আম্পায়ার। ফলে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট হলো ড্র। দ্বিতীয় টেস্ট আগামী ২৩ মে শুরু হবে মিরপুরে।
আগের দিনের ২ উইকেটে ৩৯ রান নিয়ে বৃহস্পতিবার ম্যাচের পঞ্চম দিনে খেলতে নামে শ্রীলঙ্কা। ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন করুনারত্নে। তার সঙ্গী হন কুশল মেন্ডিস। এই জুটি দলকে টেনে নিয়ে যান ১০৬ রান পর্যন্ত। এই জুটি বিচ্ছিন্ন করেন বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
পানি-পানের বিরতির পর দ্বিতীয় বলেই আগ্রাসী কুসল মেন্ডিসকে বোল্ড করে দেন তাইজুল ইসলাম। ৪৩ বলে ৪৮ রান করে ফেরেন মেন্ডিস। তার ইনিংসটি গড়া ৮ চার ও এক ছক্কায়।
এরপর মাঠে নামেন প্রথম ইনিংসে ১৯৯ রান করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। এবার রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। তাকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরত পাঠান তাইজুল ইসলাম। ১৩ বল খেলে ফেললেও রান করতে পারছিলেন না ম্যাথুস। সেই বৃত্ত ভাঙতেই হয়তো আগ্রাসী শট খেলতে গেলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। তাতে বিদায় নিতে হলো তাকে হতাশা নিয়েই। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নেন তাইজুল। উইকেটে ৪১ রান করা দিমুথ করুনারত্নের সাথী তখন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
সতীর্থের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করেন অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। ১৩২ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। টেস্ট ক্যারিয়ারে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের এটি ২৮তম পঞ্চাশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে করলেন তৃতীয়বার।
ফিফটির পরই ফেরেন করুনারত্নে। তাইজুলের করা ৪৮তম ওভারের প্রথম বলটি উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলেন তিনি। কিন্তু ব্যাটে-বলে করতে পারেননি ঠিকমতো। বল উড়ে যায় মিড-উইকেটে। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ মুঠোয় জমান বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। শেষ হয় ২ চারে ১৩৮ বল স্থায়ী করুনারত্নের ৫২ রানের ইনিংস।
ক্রিজে জমে যাওয়া ধনাঞ্জয়াকে এরপর ফেরান সাকিব। একবার বেঁচে যান একটুর জন্য ক্যাচ ফিল্ডারের কাছে না যাওয়ায়। এবার আর টিকলেন না, সাকিব আল হাসানকে পুল করার চেষ্টায় মিডউইকেটে ধরা পড়েন মুশফিকুর রহিমের হাতে। ভাঙে ৫৫ বল স্থায়ী ১৮ রানের জুটি। তিন চার ও এক ছক্কায় ৬০ বলে ৩৩ রান করেন ধনাঞ্জয়া।
এরপর থেকেই ডিকভেলা ও চান্দিমালের প্রতিরোধের শুরু। এরই মাঝে সুইপ করে ক্যাচের মতো দেন নতুন ব্যাটসম্যান নিরোশার ডিকভেলা। তবে স্কয়ার লেগে লাফিয়ে তাইজুল ইসলাম কেবল আঙুল ছোঁয়াতে পারেন। এরপর সাকিবের বলে আরেকবার জীবন পান ডিকভেলা। লেগ সাইডে খেলেন ডিকভেলা। তার ব্যাট থেকে বল যায় লেগ গালিতে। কিন্তু একটুর জন্য হয়নি ক্যাচ।
পরে তাইজুলকেও হতাশ করেন ডিকভেলা। ৬৪তম ওভারের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে পড়ে টার্ন করে ভেতরে ঢোকে বেশ খানিকটা। পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করেন নিরোশান ডিকভেলা। কিন্তু ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল প্যাডে লেগে বাঁহাতি ডিকভেলার লেগ স্টাম্পের পাশ দিয়ে যায়।
এরপর দু’জন খেলেছেন আরো কিছুক্ষণ। তারপরই আসে ড্রয়ের ঘোষণা। চান্দিমাল ১৩৫ বলে ৩৯ রানে ও নিরোশান ডিকভেলা ৯৬ বলে ৬১ রানে থাকেন অপরাজিত। বল হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে চারটি উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। বাকি এক উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।