নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় বাংলাদেশের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৮ এএম, ৯ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:০৮ এএম, ১০ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ জয়ের ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের মাটিতে টানা সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। কিউইদের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে সহজ জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। তৃতীয় ম্যাচে সিরিজ নিশ্চিত করতে পারেনি লালসবুজের দল। চতুর্থ ম্যাচে সফরকারীদের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জয় নিয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ৩-১ সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগার বাহিনী।
আজ বুধবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের বোলিং তোপে ১৯.৪ ওভারে মাত্র ৯৩ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। ৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর নাঈম শেখের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৫ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটের জয় নিয়ে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন নাসুম আহমেদ।
টস জিতে প্রথমেই ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেয় সফরকারী দল। ব্যাটিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ব্ল্যাক ক্যাপরা। রানের খাতা খোলার আগেই কিউই শিবিরে আঘাত হানেন টাইগার স্পিনার নাসুম আহমেদ। ইনিংসের শুরুতেই রাচিন রবীন্দ্রকে শূন্য রানে ফেরান এই ঘূর্ণি জাদুকর। এরপর তার হাত ধরেই দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় টিম বাংলাদেশ। এবার তার শিকার ফিন অ্যালেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ক্যাচ বানিয়ে তাকে সাজঘরে ফেরান নাসুম। অ্যালেনের ব্যাট থেকে আসে ৮ বলে ১২ রান।
শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে থাকেন টম লাথাম এবং উইল ইয়ং। কিন্তু এই জুটিকে বেশিদূর যেতে দেননি মেহেদি হাসান। ফিরিয়ে দেন অধিনায়ক লাথামকে। লাথামের ব্যাট থেকে আসে ২৬ বলে ২১ রান। তবে অন্য প্রান্তে ইয়ং টিকে থাকলেও অন্যরা উইকেটে যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দেন। ২২ গজে আবারও স্পিন ঘূর্ণি নিয়ে আর্বিভূত হন নাসুম আহমেদ। আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন কিউই ব্যাটসম্যানদের জন্য। এই স্পেলে পরপর দুই উইকেট নিয়ে খাদের কিনারে ঠেলে দেন সফরকারীদের। জাগিয়ে তোলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। তার বলে ফিরে যান হ্যানরি নিকোলস এবং গ্রান্ডহোম। নিকোলস করেন ১ রান। আর গ্রান্ডহোম শূন্য রানে ফিরে যান।
মাত্র ৪ ওভার বল করে ২ মেডেন নিয়ে ১০ রানে ৪ উইকেট নেন নাসুম। এরপর মুস্তাফিজ আর সাইফউদ্দিনের দাপুটে বোলিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে কিউইরা। শেষদিকে আর কোন ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। মাত্র তিনজন ব্যাটসম্যান পেরোতে পেরেছেন দুই অঙ্কের ঘর। আর তাতেই মাত্র ৯৩ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন উইল ইয়ং। বাংলাদেশের হয়ে নাসুম ৪টি, মুস্তাফিজ ৪টি উইকেট নেন। এছাড়া সাইফউদ্দিন এবং মেহেদি নেন ১টি করে উইকেট।
পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টির চতুর্থ ম্যাচে ৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই আগ্রাসী হতে গিয়ে আউট হয়ে ফিরে গেছেন ওপেনার লিটন দাস। তার ব্যাট থেকে আসে ৬ রান। কোল ম্যাকঞ্চির বলে ফিল অ্যালেনকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিবও। তিনি ফিরেছেন ৮ রান করে। প্যাটেলের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন এই অলরাউন্ডার। এরপর রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন মুশফিক। এজাজ প্যাটেলের একই ওভারে এই দুই অভিজ্ঞ ফিরে গেলে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
৩২ রানে ৩ টপ অর্ডার ফিরে যাওয়ার পর ইনিংস মেরামতের কাজে মনোযোগ দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অন্য প্রান্তে তার সঙ্গী ছিলেন ওপেনার নাঈম শেখ। দু'জন মিলে দেখে-শুনে খেলতে থাকেন কিউই বোলারদের বিপক্ষে। সিঙ্গেল-ডাবলসেই দলকে এগিয়ে নিয়েছেন দু'জন। তবে রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নিতে হয় ভালোই খেলতে থাকা নাঈমকে। দলীয় ৬৭ রানের মাথায় রান আউট হয় নাঈম। দলের হয়ে নাঈম করেন ২৯ রান। শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ এবং আফিফ হোসেন দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থেকে করেন সর্বোচ্চ ৪৩ রান। এছাড়া আফিফ হোসেন করেন ৬ রান।
সফরকারী দলের হয়ে ২টি উইকেট নিয়েছেন এজাজ প্যাটেল। এছাড়া ১টি উইকেট নিয়েছেন কোল ম্যাকঞ্চি। সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-২০ অনুষ্ঠিত হবে ১০ সেপ্টেম্বর ।