পশ্চিমবঙ্গে জয়ের দ্বারপ্রান্তে তৃণমূল কংগ্রেস
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:২০ পিএম, ২ মে,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:১৮ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা চলছে। ভোটের চলতি ফলাফল দেখে ধারণা করা যাচ্ছে, ফের একবার বাংলার মসনদে বসবে তৃণমূল কংগ্রেস।
আজ রবিবার (২ মে) ভারতীয় সময় সকাল আটটা (বাংলাদেশ সময় সাড়ে আটটা) থেকে শুরু হয়েছে ভোট গণনা।
ভারতী গণমাধ্যম এপিবি আনন্দ তাদের সর্বশেষ বুলেটিনে বলেছে, তৃণমূল এগিয়ে আছে ২০৬ টি আসনে। আর বিজেপি এগিয়ে আছে ৮৩টি আসনে। কংগ্রেস-বাম দল ও আইএসএফের গড়া সংযুক্ত মোর্চা এগিয়ে আছে ৩টি আসনে।
মোটামুটিভাবে অর্ধেক রাউন্ডের ভোট গণনা শেষ হয়েছে এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি বিষয়ও পরিষ্কার হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সম্প্রদায় শুধু হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপিকে ভোট দেয়নি।
যে রাজ্যে মোটামুটি ৭৫ শতাংশ হিন্দুর ভোট, সেখানে হিন্দু বাঙালি যদি বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিত, যেমনটা তারা দিয়েছিল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে, তবে নিঃসন্দেহে বিজেপি এ পর্যায়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকত।
২০১৪ সালের লোকসভা থেকে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হিন্দু ভোট ২১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৭ শতাংশ হয়েছিল। এই মেরুকরণ ২০২১ সালে আরও তীব্র হবে বলে আশা করা গিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি ব্যর্থ করে দিয়েছে বাঙালি হিন্দুরা।
তবে তারা বিজেপিকে কিছু ভোট দিয়েছে বলেও মনে করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সঞ্জীব মুখার্জি। তিনি মনে করেন, বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতি একেবারে ব্যর্থ হয়নি।
সঞ্জীব মুখার্জি বলেন, ‘পুরোপুরি মেরুকরণের রাজনীতি ব্যর্থ হয়নি। হিন্দুদের একটা বড় অংশ অবশ্যই বিজেপিকে ভোট দিয়েছে, তা না হলে বিজেপি ৩ (২০১৬) থেকে ৮৩-তে (২০২১, এখন পর্যন্ত) পৌঁছাত না। বিজেপি ভালোই ধর্মীয় মেরুকরণ করে ফেলেছে এ রাজ্যে, এটা অস্বীকার করা যাবে না।
কিন্তু অন্য সব রাজ্যের ক্ষেত্রে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর যেটা দেখা গিয়েছিল, সেটা এখানেও দেখা গেল। লোকসভা থেকে বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভোট ১২ থেকে ১৬ শতাংশ কমেছে সব রাজ্যেই। এটা এখানেও খেটেছে।’
তবে হিন্দুদের একটা বড় অংশ যে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে, সেটাও অবশ্য স্বীকার করেছেন সঞ্জীব। ‘পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি অনেকাংশে পাল্টে গেল এ নির্বাচনে। একদিকে একটা হিন্দু ভোটব্যাংক তৈরি হলো, অন্যদিকে তৈরি হলো একটা ধর্মনিরপেক্ষ ভোট। আর বামপন্থী ও কংগ্রেসিরা একেবারে মুছে গেল’, বলেন তিনি।
এখন পর্যন্ত প্রথম রাউন্ডের গণনা শেষ হয়েছে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে। এতে তৃণমূল-বিজেপির প্রার্থীদের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই স্পষ্ট। তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও বলা যাচ্ছে না, তারাই গদিতে বসছে। কারণ, প্রতিটি কেন্দ্রে কয়েক রাউন্ড ভোট গণনা হয়।
দল ২০৬ আসনে এগিয়ে থাকলেও নিজ আসনে পিছিয়ে আছেন দিদি। নন্দীগ্রামে সর্বশেষ খবরে জানা যাচ্ছে, মমতার থেকে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তৃতীয় রাউন্ডের পর এগিয়ে আছেন চার হাজারের বেশি ভোটে।
বিধানসভার মোট আসন ২৯৪টি থাকলেও নির্বাচনের মধ্যে দুই প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় দুটি আসনের নির্বাচন স্থগিত হয়। ২৯২টি আসনে ভোট হয়েছে। প্রতিটি আসনের ভোট গণনা শেষ হলে বোঝা যাবে কার পাল্লা ভারী। কে পাচ্ছেন নীলবাড়ির কর্তৃত্ব।