মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা ছাড়তে বললো যুক্তরাষ্ট্র
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:৩৮ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:২১ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এক বিক্ষোভকারী তরুণীর মৃত্যুর পর সহিংসতা থেকে সরে আসতে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।
আজ শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারের ক্ষুদ্র নাগা নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা বিক্ষোভ করবেন।
নাগা জনগোষ্ঠীর নেতা কি জং রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা স্বৈরশাসনের অধীনে ফেডারেল রাষ্ট্র গঠন করতে পারি না। আমরা জান্তা সরকারকে মেনে নিতে পারছি না।’
গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানী নেপিদোতে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভকালে গুলিতে আহত হন মিয়া থতে থতে খাইং নামের ২০ বছরের এক নারী। তিনি নেপিডোর একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল শুক্রবার তিনি মারা যান।
বিক্ষোভে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সম্প্রতি তিনি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নিতে মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস গতকাল বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে আমরা আবারও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের প্রতি সহিংস আচরণ থেকে সরে আসতে আহ্বান জানিয়েছি। আচরণ পরিবর্তনের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর চাপ প্রয়োগ করতে আমরা মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে কাজ করছি।’
এদিকে নিহত বিক্ষোভকারী মিয়া থতে থতে খাইংয়ের স্মরণে ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মিয়া থতে থতে খাইংয়ের বোন পহ পহ সাংবাদিকদের গতকাল বলেন, ‘বিক্ষোভ সফল করতে সবাই অংশ নিন। এটুকুই আমি বলতে চাই।’
মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স বলছে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমারে প্রায় ৫৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রেলওয়ে কর্মী, সরকারি চাকরিজীবী ও ব্যাংক কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে অসহযোগ কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলেন।
গতকালও ষষ্ঠ রাতের মতো মিয়ানমারে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়। ইন্টারনেট পর্যবেক্ষক নেটব্লকস বলছে, মিয়ানমারে উইকিপিডিয়া বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বেশ কিছু আধেয়তেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের প্রতি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংস আচরণের নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন জেনারেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচিত কারচুপির অভিযোগ তুলে ক্ষমতা দখল করেছে জান্তা সরকার। ওই নির্বাচনে সু চির দল নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। আটকের পর থেকে নোবেলজয়ী সু চি কোথায়, কীভাবে আছেন তা, জানা যায়নি। সু চির বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে। সু চির অভিযোগের শুনানি আগামী ১ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।