খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বাংলাদেশসহ ৯ দেশকে সতর্কবার্তা দিল এফএও
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:৪৯ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:০৪ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশকে সতর্কবার্তা দিল জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে চালের দাম গত এক বছরে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। উৎপাদনে ঘাটতি, সীমিত আমদানি ও করোনার প্রভাবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে চালের এই মূল্যবৃদ্ধি।
গত বুধবার এফএওর এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। খাদ্যপণ্যের দামের প্রবণতার ওপর মাসিক এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের অক্টোবরের পর বাংলাদেশে চালের দাম এতটা আর বাড়েনি।
বাংলাদেশ, আর্জেন্টিনা, জিম্বাবুয়ে, সুদান, দক্ষিণ সুদান, নাইজেরিয়া, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান ও ব্রাজিলকে এই উচ্চ ও মাঝারি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশগুলোতে এক বা একাধিক প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক পর্যায়ে, যা খাদ্যপ্রাপ্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রতিবেদনে নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান ও সুদানকে দেওয়া হয় উচ্চমাত্রার সতর্কবার্তা। মাঝারি মাত্রার সতর্কবার্তা দেওয়া হয় বাংলাদেশসহ বাকি ৬টি দেশকে।
আর্জেন্টিনা ও জিম্বাবুয়েতে সব ধরনের খাবারের দাম, সুদান ও দক্ষিণ সুদানে প্রধান খাবারের দাম, নাইজেরিয়ায় ভুট্টা, তাজিকিস্তান ও কিরগিজস্তানে গমের আটা, ব্রাজিলে দানাদার খাদ্য ও বাংলাদেশে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।
সাধারণত এই প্রতিবেদনে কোনো দেশে প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেলে তার কারণ ও প্রভাব তুলে ধরা হয়। খাদ্যপণ্যের দাম দ্রুত কমানোর কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেশগুলোকে পরামর্শও দেওয়া হয় এতে।
এফএওর প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুরু করেছে। বেসরকারি খাতকে আমদানিতে উৎসাহ দিতে শুল্ক ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। তারপরও চালের দাম কমছে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং খাদ্যনীতিবিষয়ক গবেষক এ এম এম শওকত আলী বলেন, সরকার দেরিতে হলেও চাল আমদানির যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা দ্রুততর করা উচিত। যাতে সরকারি মজুত বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ে।
গত বুধবার চালের আমদানি পরিস্থিতি ও দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের খাদ্য পরিধারণ ও মূল্যায়ন কমিটির জরুরি সভা হয়। সেখানে চাল আমদানি সহজতর করতে ভারত থেকে আসা চালের ট্রাক যাতে দ্রুত দেশে আসতে পারে, সে ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে বাজারে অযাচিতভাবে চালের দাম যাতে না বাড়ে, সে জন্য তদারকি বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘গত বছর বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে চালের উৎপাদন কমেছে। যে কারণে আমরা চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। তবে এমনভাবে আমদানি করা হবে, যাতে কৃষক আবার ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ধানের দাম যাতে না কমে যায়।’
শুধু এফএওর প্রতিবেদন নয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবেও আমদানির উদ্যোগ নেওয়ার এক মাসের মাথায়ও চালের দাম কমেনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের হিসাবে বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম সর্বোচ্চ ৪৮ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি ও সরু চালের দামও গত এক সপ্তাহে ২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবেও গত এক মাসে মোটা চালের দাম কমেনি। প্রতি কেজি মোটা চালের পাইকারি মূল্য ৪১ থেকে ৪২ টাকা এবং খুচরায় ৪২ থেকে ৪৬ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।