আরজি করের গ্লাভসে থাকা লাল দাগ রক্তের নয়
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৯ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০৯:৪২ পিএম, ২৯ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনকাণ্ডের প্রতিবাদে যখন অনশনে বসেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধিরা, তখনই উঠে আসে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে রাখা সিলড গ্লাভসে রক্ত মিলেছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় শোরগোল শুরু হয়। অভিযোগের পর তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্যভবন। তবে এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, গ্লাভসে যে লাল দাগ দেখা গেছে তা নাকি রক্তের নয়! অর্থাৎ, গ্লাভসে কোনও রক্তের দাগই মেলেনি। মঙ্গলবার আরজিকর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে স্বয়ং সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় জানালেন, গ্লাভসের লাল দাগ রক্তের নয়।
বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ল্যাবে হওয়া পরীক্ষায় এই প্রমাণ মিলেছে বলে জানান তিনি।তবে লাল রং কী ভাবে গ্লাভসে এল, তা খতিয়ে দেখতে সেগুলি ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ঘটনার সূত্রপাত প্রায় তিন সপ্তাহ আগে। আর জি করের ট্রমা কেয়ারে কর্মরত এক ইন্টার্ন অভিযোগ করেছিলেন, চিকিৎসা করার সময় তিনি রক্তমাখা গ্লাভসটি দেখতে পান। ওইদিন সকালে একজন এইচআইভি রোগীর রক্ত নেওয়ার জন্য গ্লাভস নেন। প্যাকেট থেকে বের করতে গিয়ে তাতে রক্তের দাগ দেখে তিনি ভাবেন, প্রথম গ্লাভসটা হয়তো কোনও কারণে নোংরা ছিল। সেই গ্লাভস ফেলে অন্যটা নিতে গিয়েও দেখেন একই অবস্থা। সিলড প্যাকেটের প্রায় প্রত্যেকটি গ্লাভসই নোংরা।
নার্স জানিয়েছিলেন, সকালে ওই গ্লাভসের প্যাকেটটি খোলা হয়। চিকিৎসকদের দাবি, এমন রক্তমাখা গ্লাভস হাতে পরে চিকিৎসা করলে রোগীদের শরীরে সংক্রমণ হতে পারে। বিশেষত হেপাটাইসিস কিংবা এইচআইভি-র মতো রোগ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা। অভিযোগকারীর দাবি ছিল, এর আগেও আরজি কর হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটেছে। দিনের পর দিন এই ধরনের অপরিষ্কার গ্লাভস হাসপাতালে আনা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। মাঝে বেশ কিছু দিন নোংরা গ্লাভসের জোগান বন্ধ থাকলেও আবার সেই একই জিনিস শুরু হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে অভিযোগ পেয়েই তদন্তের নির্দেশ দেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া। ওই রক্তমাখা গ্লাভসগুলি আলাদা করে সরিয়ে রাখতেও বলা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরাও গর্জে ওঠেন। অভিযোগ করেন নার্সরাও। ডা. আসফাকুল্লা নাইয়া বলেন, 'স্টেরাইল গ্লাভস না দিয়ে ইউজড গ্লাভস দেওয়া এটার মানে কী? এটার মানে একটা গ্লাভস রিপিটেডলি ইউজ করলে পরের বার গ্লাভসের টাকাটা যে বেঁচে যায়, সেই টাকাটা কোনও বাবুদের পকেটে যায়।' চাঞ্চল্যকর দাবি করেন নার্সরাও। বলেন, ইদানিং নাকি হাসপাতালে অনেক ব্যবহৃত সিরিঞ্জও আসছে।
দিনকাল/এসএস